বীরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই কমিটির সদস্য ‘বিতর্কিত’

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির এক সদস্যের নিজের সনদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2017, 03:13 PM
Updated : 10 Feb 2017, 03:15 PM

গত শনিবার কমিটির সভাপতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগে এস এম এ খালেক নামের ওই ব্যক্তিকে কমিটির সদস্য পদ থেকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছেন।

অভিযোগের একটি অনুলিপি কমিটির সদস্য সচিব বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগকারীদের অন্যতম বীরগঞ্জ উপজেলার দুই সাবেক কমান্ডার সামসুল আলম চৌধুরী ও কবিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির নির্দেশিকায় রয়েছে- ভারতীয় তালিকায় এবং লাল মুক্তিবার্তায় যার নাম নেই তিনি যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য হতে পারবেন না।

সামসুল আলম চৌধুরী বলেন, নির্দেশিকা অনুযায়ী তিনি (খালেক) নিজেই এখন বাছাইয়ের তালিকাভুক্ত। এখন তাকেই প্রমাণ করতে হবে তিনি ‘বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধা’ নন।

বীরগঞ্জ উপজেলার বর্তমান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য কালিপদ রায় ও সদস্য প্রেমানন্দ রায় বলেন, এস এম এ খালেকের নাম যাচাই-বাছাই কমিটিতে কীভাবে এসেছে তারা জানেন না।

লাল মুক্তিবার্তায় যে খালেকের নাম ছিল না এটা তাদের জানা ছিল না বলে তাদের ভাষ্য।

এ বিষয়ে এস এম এ খালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি মুজিব ক্যাম্পের ট্রেনিংপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। আর যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য পদে থাকার জন্য আমি তো তদবির করিনি। কীভাবে নাম এসেছে আমার জানা নেই।”

তবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যেকোনো বাছাই প্রক্রিয়ায় দাঁড়াতে তার আপত্তি নেই বলে জানান।

বীরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছেন।

“যেহেতু সভাপতিকে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত তিনিই দেবেন।”

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, আবেদনকৃত ও তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিরীক্ষণ এবং তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিষ্পত্তিতে উপজেলা, জেলা/মহানগর যাচাই-বাছাই কমিটি করেছে সরকার।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ১২ জানুয়ারি এসব কমিটি গঠনের আদেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ে এর আগে গঠিত সব কমিটি বাতিল করেছে।

প্রতিটি উপজেলায় সাত সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি করা হয়েছে। ওই এলাকার সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হলে তিনি সভাপতি হবেন। যেখানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদস্য নেই সেসব এলাকার কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় মনোনীত করবে।

কোনো উপজেলার সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা না হলে তার মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধাকে কমিটির সদস্য করা হবে। সংসদ সদস‌্য মনোনীত প্রতিনিধিকে কমিটির সভাপতি করা হলে ওই সংসদ সদস‌্য কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন।

সংসদ সদস্য এবং তার মনোনীত প্রতিনিধির বাইরে উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল এবং জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা তার মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা মনোনীত একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি কমিটি সদস্য হিসেবে থাকবেন।

এই কমিটির সদস‌্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার মুক্তিযোদ্ধা।