ওই শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়েছে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’, যার বিষয় কোড ১৪৩। কিন্তু দুই বছর আগে তাদের নিবন্ধনের সময় কোড লেখা হয় ১৪২, সেটি শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা বিষয়ের কোড।
বিষয় কোডের এই গোলমাল খেয়াল করেননি ছাত্র-শিক্ষক কেউ। দাখিল পরীক্ষা শুরুর আগে প্রবেশপত্র হাতে আসার পর সেখানে কোড নম্বর দেখে শিক্ষকদের চোখে পড়ে গোলমালের বিষয়টি।
এরপর শিক্ষার্থীদের ডেকে বিষয় পরিবর্তনের কথা বলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার সেই পরীক্ষা দিয়েছে ওই ছয়টি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা।
মাদ্রাসাগুলো হচ্ছে- মনিরাবাদ সুফিয়া একরামিয়া আলিম মাদ্রাসা, শাখাতি জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ভুল্লারহাট আশরাফিয়া দাখিল মাদ্রাসা, দলগ্রাম দাখিল মাদ্রাসা, তেঁতুলিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও কাশিরাম একরামিয়া আলিম মাদ্রাসা।
এসব মাদ্রাসায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর বিষয় কোডে গোলমাল হয়েছে বলে অধ্যক্ষরা জানিয়েছেন।
তবে লালমনিরহাটে বিষয় কোড ভুল নিয়ে কোনো অভিযোগ এখনও তাদের হাতে পৌঁছায়নি বলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান।
মনিরাবাদ সুফিয়া একরামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গোলাম আযম মওদুদী বলেন, “দায়িত্বরতরা ভুল করেছে। বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবার শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের বই সরবরাহ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের।”
শাখাতি জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মোত্তালিব বলেন, কয়েক দিন আগে বিষয়টি জানতে পেরে তারা শিক্ষার্থীদের শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ক্লাসও নিয়েছেন।
চলতি বছর উপজেলার কাকিনা মহিমারঞ্জন উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলার ১৯টি মাদ্রাসার ৫০৪ জন পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা।
এই কেন্দ্রের সচিব ও কাকিনা মোস্তফাবিয়া কামিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সাইদার রহমান বলেন, “কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে বিষয় পরিবর্তনের ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন করার কিছুই নেই।”
এদিকে এ ঘটনায় শিক্ষকদের দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বুধবার দুপুরে মনিরাবাদ সুফিয়া একরামিয়া আলিম মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক ভিড় করেছেন।
এ মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী ফাহিম হোসেন বলেন, “পরীক্ষার দুই দিন আগে আমাদের ডেকে এনে বিষয় পরিবর্তনের কথা বলল। বলেছে দুই দিনের মধ্যে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে।”
পরীক্ষার্থী সুরমার একই অভিযোগ, “দুই বছর ধরে যে বিষয়ে পড়লাম, এখন শুনছি সে বিষয়ে আমরা পরীক্ষা দিতে পারব না।”
ক্লাসে বরাবর প্রথম হওয়া তানজিনা হতাশা প্রকাশ করে বলে, “আমি কখনও ফেল করিনি। বরাবর আমার রোল ছিল ১। হঠাৎ বিষয় বদল হল, দুদিন ধরে ঘুমাতে পারছি না।”
কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফরোজা বেগম বলেন, “একটি মাদ্রাসা থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”