কুনিও হত্যার পরিকল্পনা হয় ২ মাস ধরে

জেএমবির রংপুরের আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী রংপুর নগরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে দুই মাস ধরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2017, 10:49 AM
Updated : 6 Feb 2017, 10:55 AM

রংপুরের বিশেষ জজ নরেশচন্দ্র সরকারের আদালতে সোমবার সকাল ১০টা থেকে চার ঘণ্টা ধরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউনিয়া থানর ওসি আব্দুল কাদের জিলানীর সাক্ষ্য দেন।

তদন্ত কর্মকর্তার বরাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশচন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা বলেন, জঙ্গিরা ২০১৫ সালের ২ অসাস্ট রংপুর নগরীর নূরপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাসের পাশাপাশি একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কেনেন।

“অটোরিকশায় করে তারা কুনিওর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতেন। কুনিওকে প্রথম গুলি করেন মাসুদ রানা। গুলিটা কুনিওর গলায় লাগে। পরে মাসুদের সঙ্গী সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল কুনিওর বুকে ও হাতে গুলি করেন। এতে ঘটনাস্থলেই কুনিও মারা যান।”

আইনজীবী রথীশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তদন্তে ও আদালতে দেওয়া মাসুদের জবানবন্দিতে হত্যার ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী।

“তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। ৫৭ সাক্ষীর মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার হয়। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন।”

মামলার অন্য দুই সাক্ষী হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষের ঘোষণা দিয়ে আদালত আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ঠিক করে দিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী রথীশ।

গত বছরের ৩ অক্টোবর সকালে রংপুর নগরীর মুন্সীপাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে রিকশায় করে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে ঘাষের খামারে যাচ্ছিলেন ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি। পথে গুলিতে মারা যান।

ওই বছরের ১০ জুলাই জেএমবির ৮ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

মামলার প্রধান আসামি মাসুদ ছাড়াও জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ ও সাখাওয়াত আটক রয়েছেন। আদালতে তাদের হাজির করা হয়েছিল।

আর সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল এ বছর ৫ জানুয়ারি রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’, নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান গত বছরের ২ অগাস্ট ভোরে রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যান।

আরেক আসামি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মকর রাজমাল্লী এলাকার আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব পলাতক। বিপ্লব রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। গত বছরের জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ইব্রাহীম কবীর।