কুনিও হোশি মুসলিম হয়েছিলেন, আদালতে জানালেন সাক্ষী

জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি গুলিতে নিহত হওয়ার আড়াই মাস আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বলে আদালতে সাক্ষ্যে জানিয়েছেন তার রংপুরের বাড়িওয়ালা জাকারিয়া বালা।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2017, 02:35 PM
Updated : 29 Jan 2017, 02:36 PM

রোববার দুপুরে রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালতে সাক্ষ্যে তিনি এমন তথ্য দেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা।

তিনি বলেন, “জাকারিয়া বালা তার সাক্ষ্যে ২০১১ সালে জাপানে গিয়ে কুনিওর পরিচয় ও তার রংপুরে আসার ঘটনার বর্ণনা দেন।

“রংপুরে এসে নগরীর মুন্সিপাড়ায় তার বাড়িতে ভাড়া থাকা শুরু করে এবং আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল জাকারিয়ার জাপান প্রবাসী দুই ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আলুটারি গ্রামে জাপানি কয়েল ঘাসের খামার করেন বলে জানান।”

রথিশ বলেন, “হত্যার আড়াই মাস আগে কুনিও মুসলিম হয়ে গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া নাম নেন বলেও সাক্ষ্যে জানিয়েছেন জাকারিয়া।”

২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর সকালে জাকারিয়ার বাড়ি থেকে রিকশায় করে আলুটারি গ্রামে ঘাষের খামারে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি।

রোববার আদালতে আরও সাক্ষ্য দেন রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবু তালেব।তিনি কুনিওকে বহনকারী রিকশাচালক আব্দুল মোন্নাফ এবং যে বাড়ির সামনে কুনিও নিহত হন সেই বাড়িওয়ালার ছেলে মাইদুল ইসলাম মুরাদের দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথিশ বলেন, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবু তালেব তার সাক্ষ্যে রিকশাচালক মোন্নাফ ও বাড়িওয়ালার ছেলে মাইদুলের দেওয়া জবানবন্দির বর্ণনা দেন।

এদিন জাকারিয়া বালা, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবু তালেব ছাড়াও গ্যারেজ মালিক আব্দুল জলিল জাকারিয়ার স্ত্রী আয়েশা জাকারিয়া, তালা-চাবি মেকানিক আব্দুল জলিল, ঘটনাস্থলের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম এবং আলামত জব্দ তালিকার সাক্ষী রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের কর্মচারী সোহেল আজাদ ও ফারুক ইসলাম সাক্ষ্য দেন।

সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। পরে সোমবার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রেখে আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন বিচারক।

এ নিয়ে চারদফায় মামলার বাদীসহ ২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। মামলায় আরও ৩২ জনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে।

এ হত্যা মামলায় গত বছরের ১০ জুলাই জেএমবির আট সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

সাক্ষ্য গ্রহণের সময় কারাগারে থাকা আসামি জেএমবির রংপুর আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা, সদস্য ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ, সাখাওয়াত হোসেনকে আদালতে হাজির করা হয়।

পলাতক আসামিদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল গত ৫ জানুয়ারি রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান গত বছরের ২ অগাস্ট ভোরে রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।

আরেক আসামি আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব এখনও পলাতক রয়েছেন। তিনি রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ইব্রাহীম কবীর বলেন, আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব গত বছরের জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।