জঙ্গি নন চবি ছাত্র আব্দুন নূর

আদালতের আদেশে ‘জঙ্গি’ অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুন নূর।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2017, 12:01 PM
Updated : 29 Jan 2017, 12:01 PM

আব্দুন নূর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আব্দুর রশিদের ছেলে এবং গণিত স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

আব্দুন নূর সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের ১৩ জুলাই মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী এলাকা থেকে তাকে সন্দেভাজন জঙ্গি হিসেবে আটক করে পুলিশ।

“এরপর ১৪ জুলাই জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শালিখা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। ১৬ জুলাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে (রিমান্ড) নেয় শালিখা থানা পুলিশ।”

ওই সময় তিনি ৫১ দিন মাগুরা কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন বলে জানান।

নূর বলেন, পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে গত ২৫ জানুয়ারি মাগুরার জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শালিখা থানার এসআই ইদ্রিস বলেন, আব্দুন নূরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অভিযোগের কোনো তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় সম্প্রতি তিনি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন।

নূরের আইনজীবী হাবিবুর রহমান লাবলু জানান, পুলিশ তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নূর গ্রেপ্তারের কয়েকদিন আগে পাশের জেলা ঝিনাইদহে জঙ্গি হামলায় পরপর দুইজন পুরোহিত নিহত হন। মোটরসাইকেল আরোহী জঙ্গিরা তাদের উপর হামলা চালায়। প্রচণ্ড ভীতিকর ওই সময়ে চট্টগ্রামের এক যুবকের মোটরসাইকেলে মাগুরার জামায়াত অধ্যুষিত সীমাখালী-শতখালী এলাকায় অবস্থান ছিল সন্দেহজনক। সব মিলেয়ে তিনি পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন।

লেখাপড়ার পাশাপাশি ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান ঘুরে বেড়ানো তার শখ বলে নূর জানান।

নূর জানান, চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে ২০১৬ সালের ৯ জুলাই তিনি কুষ্টিয়া আসেন। কুষ্টিয়া শহর ঘুরে চলে যান লালন শাহর মাজার ও শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি। পরে মেহেরপুরের মুজিবনগর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ হয়ে ১২ জুলাই যান নড়াইলে। চিত্রা নদী, জমিদার বাড়ি, এসএম সুলতানের বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পরদিন ১৩ জুলাই সকালে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলযোগে নড়াইল থেকে অসেন মাগুরা শালিখা উপজেলায় শতখালী গ্রামে চণ্ডিদাস রজকীনির জন্মস্থান ও ঘাট দেখতে।

তিনি আরও জানান, শতখালী বাজারে এলাকাবাসী তাকে সন্দেভাজন জঙ্গি হিসেবে নানা প্রশ্ন করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য শালিখা থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে মোটরসাইকেল চালকসহ তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরে নেওয়া হয় মাগুরা জেলা সদরে এসপি অফিসে। সেখানে পুলিশ ছাড়াও নানা প্রশ্ন করেন স্থানীয় মিডিয়াকর্মীরা।

পরে মোটরসাইকেল চালককে ছেড়ে দিলেও জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়।

নূর জানান, মামলার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার ছাত্রত্ব স্থগিত করেছে।

এখন ছাত্রত্ব ফিরে পাবেন বলে আশা করছেন তিনি।