মাদারীপুরের স্কুলছাত্রী নিতু হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র

মাদারীপুরের স্কুলছাত্রী নিতু মণ্ডল (১৪) হত্যা মামলায় একজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।  

রিপনচন্দ্র মল্লিক মাদারীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2017, 09:54 AM
Updated : 28 Jan 2017, 09:54 AM

চার মাস আট দিন পর বৃহস্পতিবার মাদারীপুর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ মৃধা।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কালকিনি উপজেলার নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী নিতু মণ্ডলকে (১৪) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ওই ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী মিলন মণ্ডল নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে দিয়েছিল। ওই মিলনকে অভিযোগপত্রে একমাত্র আাসামি করা হয়েছে।

কালকিনির ডাসার থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, মিলন মণ্ডল ওই মেয়েটিকে হত্যা করার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন। তদন্তেও বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। মিলন মণ্ডল মাদারীপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, কালকিনি উপজেলার নবগ্রাম গ্রামের নির্মল মণ্ডলের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নিতু বড়। সে নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের নবম শ্রেণিতে পড়ত। ছোট ভাই দীপ্ত মণ্ডল স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

প্রতিবেশী মিলন মণ্ডল ছোট ভাইয়ের গৃহ শিক্ষক থাকার সুবাদে নিতুকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন প্রতিবেশীরা জানান।

গত বছর ৫ অগাস্ট নিতুকে বাড়িতে একা পেয়ে মিলন মারধর করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে তার বাবা নির্মল মণ্ডল মিলনের পরিবারকে জানান বলে নিতুর পরিবারের ভাষ্য।  

মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছর ঈদের ছুটি শেষে ১৮ সেপ্টেম্বর নিতুর স্কুল খোলে। ওইদিন স্কুলে যাওয়ার পথে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম উত্তরপাড়া ঠাকুর বাড়ির কাছে নিতুকে কুপিয়ে হত্যা করেন মিলন। পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী তাকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়।

ডাসার থানার এসআই তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ মৃধা জানান, ঘটনার দিন রাতে নিতুর বাবা নির্মল মণ্ডল বাদী হয়ে কালকিনি উপজেলার ডাসার থানায় মিলনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহদেব চন্দ্র বাড়ৈ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মেয়েটি অনেক মেধাবী ছিল। জেএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল করেছিল।

তিনি চান এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার হউক।

নবগ্রামের বাসিন্দা সুজন মণ্ডল বলেন, “নিতুর হত্যাকাণ্ডটি আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে। এভাবে প্রকাশ্যে একটি মেয়েকে বখাটের হাতে জীবন দিতে হবে কেউ ভাবতে পারিনি। পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে, এখন আমরা ওই পাষণ্ডর শাস্তি দেখার অপেক্ষায় আছি।”

নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিথীকা মল্লিক ও মনিকা গুপ্ত বলেন, মিলনের দ্রুত শাস্তি হলে আর কোনো বখাটে এমনভাবে কোনো মেয়েকে হত্যা করতে সাহস পাবে না।

তারা হত্যাকারীর দ্রুত শাস্তি চান।

নিতুর মা নিপা মণ্ডল বলেন, “মেয়েটির জন্য অনবরত চোখের জল ফেলছি। পাষণ্ড মিলনের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা স্বস্তি পাচ্ছি না। দ্রুত ওর দৃষ্টন্তমূলক শাস্তি দেওয়া হউক।”

মিলন মণ্ডল ওই গ্রামের মৃত বীরেন মণ্ডলের ছেলে এবং কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক (সন্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।