আ. লীগ এমপি মোসলেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা

ময়মনসিংহে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেছেন এক মুক্তিযোদ্ধা।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Jan 2017, 11:36 AM
Updated : 23 Jan 2017, 11:43 AM

দলীয় কোন্দলের কারণে মিথ‌্যা অভিযোগে এই মামলা করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ফুলবাড়ীয়ার এই সংসদ সদস‌্যের পক্ষ থেকে।

সোমবার ফুলবাড়ীয়ার মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন (৭০) বাদী হয়ে ময়মনসিংহ বিচারিক হাকিম মাহবুবুল হকের ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

মামলায় সাংসদ ছাড়াও ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী একে এম ফজলুল হক দুলাল।

মামলায় প্রধান সাক্ষী করা হয়েছে বীরউত্তম আব্দুল কাদের সিদ্দিকীকে।

আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বিশেষ এই ট্রাইব‌্যুনালে হচ্ছে।

অন্য আসামিরা হলেন ফয়জুল বারী (৬৫), আব্দুস সামাদ মাস্টার ওরফে টিক্কা খান (৭৮), আব্দুল মন্ডল (৮২), মফিজ উদ্দিন (৮২), রিয়াজ উদ্দিন ফকির (৮২) মোকছেদ আলী (৭০), এবাদুল্লাহ (৭২), মোকছেদ আলী (৮০), ওয়াহেদ আলী (৮০), ছুরহাব আলী (৮০), আবুল হোসেন (৭৮), মুছা (৭৫), আব্দুল হালিম (৬৫), আব্দুল কদ্দুছ (৬৫) ও গিয়াস উদ্দিন (৬২)।

মোসলেম উদ্দিন ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হয়ে আসছেন।

জালাল উদ্দিন বলেন, মোসলেম উদ্দিন একাত্তরেও নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন।

“জনপ্রতিনিধি হয়েও তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফুলবাড়ীয়ায় বেশ কয়েকটি এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধে জড়ান।”

একাত্তরের ২৭ জুন জোড়বাড়ীয়ায় তার বাড়িতেও লুণ্ঠন করে ঘর পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

তাছাড়া কৈয়ারচালা গ্রামে মালেকা খাতুনকে ধর্ষণের পর হত্যা, ২০ জুন কুশমাইলের বসু চৌধুরীকে, ১২ জুন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদকে এবং ফুলবাড়ীয়া বাজারে আট ঋষিকে হত্যা, ২৯ নভেম্বর তালেব আলী, সেকান্দর আলী, আলতাব আলীকে হত্যা করে ভালুকজান নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া ছাড়াও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে বধ্য ভূমিতে ফেলে দেওয়ায় মোসলেম উদ্দিনসহ উল্লেখিত আসামিরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলার বিষয়ে এমপি মোসলেমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এমদাদুল হক সেলিম বলেন, “আমার বাবা বাংলাদেশ সংবিধান প্রণয়ন কমিটি ও গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। একজন সংবিধান প্রণয়নকারী কমিটির সদস্য কী যুদ্ধাপরাধী হতে পারে?”

“দলীয় কোন্দলের কারণেই তার বাবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে,” দাবি করেন সেলিম।