তাদের চিকিৎসার বিষয়ে রোববার সকালে উচ্চতর মেডিকেল বোর্ড বসবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. অলোক কুমার দাস।
জেলা শহরের বেড়পাড়ার বাসিন্দা তোফাজ্জেল হোসেন বৃহস্পতিবার এ আবেদন করলেও তখন বিষয়টি জানাজানি হয়নি।
এ তিন রোগী হলেন তোফাজ্জেল হোসেনের দুই ছেলে আব্দুস সবুর (২৪), রায়হানুল ইসলাম (১৩) এবং নাতি সৌরভ (৮)।
চিকিৎসকদের মতে, শুধু ছেলেদের ক্ষেত্রে এই রোগ দেখো দেয়। এর কোনো চিকিৎসা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।
তোফাজ্জেল জানান, সবুরের সাত বছর বয়সের পর থেকে এ রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে সুস্থ সবল শরীরের সমস্ত অঙ্গ নিথর ও অকার্য্কর হয়ে পড়ছে। পরের ছেলে রায়হানও একই রোগে আক্রান্ত হয়।
তাদের চিকিৎসায় নিজের ব্যবসা ও পুঁজি সব হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব হয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি ডাক্তারদের কাছে জেনেছেন এই রোগের ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। আমেরিকায় এই রোগের ওষুধ তৈরির গবেষণা শুরু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
আক্রান্ত আব্দুস সবুর বলেন, “আমার খুব কষ্ট হয়। সবার মতো আমরাও এক সময় হাঁটতাম খেলতাম। এখন কিছুই করতে পারি না। মা-বাবার সাহায্য ছাড়া শরীরের কোনো অঙ্গ নাড়ানো যায় না।”
মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খায়রুল হাসান বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক ও মর্মস্পর্শী। মৃত্যু ঘটানোর অনুমতির জন্য তিনি যে আবেদন করেছেন সেটা আইনসিদ্ধ না। হয়ত তার যন্ত্রণার গভীর থেকে এটা করেছেন।
“আমরা বিভিন্নভাবে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করতে চাই।”
মেহেরপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, এই রোগটি ক্যান্সারের চেয়েও ভয়াবহ। আক্রান্তের শরীরে সব অংশের মাংসপেশী আস্তে আস্তে জমাট বেঁধে যাবে। চলাফেরা বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলার শক্তিও হারিয়ে যাবে। মৃত্যু এদের অনিবার্য।
“এই রোগটা সাধারণত বাবা-মার জেনেটিক ডিজঅর্ডারের কারণে সন্তানদের মধ্যে দেখা দেয়। শুধু ছেলেরা এই রোগে আক্রান্ত হবে।”