সাইকেলে স্কুলে যাচ্ছে কচুয়ার মেয়েরা

“আমি এখন নিয়মিত স্কুলে যাই, কখনও ক্লাস ফাঁকি দিই না’- সাইকেল পাওয়ার পর এভাবেই স্কুলের প্রতি আগ্রহ বাড়ার কথা জানাল সিংআড্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তার।

চাঁদপুর প্রতিনিধিআল-ইমরান শোভনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2017, 06:27 AM
Updated : 21 Jan 2017, 06:40 AM

নারীদের ঘরে আটকে রাখতে যখন হেফাজতে ইসলামের মতো ধর্মভিত্তিক দলগুলো মাঝে-মধ‌্যে আওয়াজ তুলছে, তখন প্রত‌্যন্ত এলাকা চাঁদপুরের কচুয়ায় মেয়েদের সাইকেলে স্কুলে যাওয়াকে স্বাগত জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।

কচুয়ার স্কুলশিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে সাইকেল দেওয়ার এই উদ‌্যোগ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের।

নারীশিক্ষার হার শতভাগে নেওয়ার লক্ষ্যে ব‌্যক্তিগতভাবে এই উদ‌্যোগ নিয়েছেন বলে জানান সাবেক এই আমলা।

এরই মধ্যে উপজেলার ৩৯টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩০০ গরিব মেধাবী ছাত্রীর যাতায়াতে সুবিধার জন্য সাইকেল দেওয়া হয়েছে।

সাইকেলের সুফল যে পাওয়া যাচ্ছে, তা স্পষ্ট সাচার বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বটুকৃষ্ণ বসুর কথায়।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেসব ছাত্রী সাইকেল পেয়েছে, তারা নিয়মিত স্কুলে আসছে।”

সাইকেল নিয়ে বিদ্যালয়ে নিয়মিত হওয়ার কথা উঠে এসেছে ইয়াসমিনের মতো আরও শিক্ষার্থীর কণ্ঠে।

তেগুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাত আরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিতারা এলাকার বাড়ি থেকে হেঁটে স্কুলে আসতে তার ৩০ মিনিট সময় লাগত।

“এমপি সাহেবের দেওয়া সাইকেল পেয়ে এখন অল্প সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারছি। ছুটি শেষে দ্রুত বাড়িও ফিরতে পারি।”

সাইকেল দেওয়ার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষক-অভিভাবকসহ সব শ্রেণির মানুষ।

মাঝিগাছা এম এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছাত্রীদের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য এমপি সাহেব ব্যক্তিগতভাবে যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা সত্যি প্রশংসনীয়। উদ্যোগটি বিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি আগ্রহী করে তুলেছে।”

নন্দনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক আব্দুল আজিজ, কচুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির, কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেনসহ সবাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস‌্য মহীউদ্দীন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার শিক্ষার উপর জোর দিচ্ছে। যে দেশ যত বেশি শিক্ষিত, সে দেশ তত বেশি উন্নত।

“আমি কচুয়া উপজেলার শিক্ষার হার শতভাগ করতে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। দরিদ্র পরিবারের ছাত্রীদের যাতায়াতে সুবিধার জন্য সাইকেল দেওয়ার পাশাপাশি বৃত্তির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।”

কেউ যেন টাকার অভাবে উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য বিভিন্ন ফাউন্ডেশন থেকে বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।