রুবি বেগম (৩২) এখন পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার বালিপাড়ায় বাবার বাড়ি থাকছেন।
রুবি বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চর হোগলা বুনিয়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে জয়নাল উদ্দিনের স্ত্রী। তাদের সাত বছরের এক ছেলে ও তিন বছরের এক মেয়ে রয়েছে।
তার মা হালিমা খাতুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও স্বামীর ১ম স্ত্রীর নির্যাতনের কারণে রুবি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন।
রুবির ছোট ভাই রুবেল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০০৬ সালে জয়নাল উদ্দিনের সঙ্গে রুবির বিয়ে হয় পারিবারিকভাবে। জয়নালের আগের স্ত্রী ও এক মেয়েও ছিল। সে কথা গোপন করে রুবিকে বিয়ে করেন তিনি।
রুবেল বলেন, বিয়ের দু/তিন বছর যেতে না যেতেই নানা অজুহাতে রুবির উপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেন স্বামী, শাশুড়ি, ননদ ও জয়নালের প্রথম স্ত্রী। শ্বশুরবাড়ি থেকে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা এনে দেওয়ার জন্য জয়নাল চাপ দিতেন রুবির উপর। নিরুপায় হয়ে রুবি তাদের কাছ থেকে মাঝে মধ্যে কিছু টাকা এনে দিলেও জয়নালকে খুশি করতেম পারেননি।
“দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সাত মাস আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন রুবি। এরইমধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পাগল বলে তাড়িয়ে দেয়।”
পরে তারা রুবিকে উদ্ধার করে বালিপাড়ায় তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন বলে জানান রুবেল।
রুবিকে বিভিন্ন স্থানে চলে যেতে চাইতেন বলে গত তিন মাস থেকে তাকে হাতে ও পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয় বলে জানান রুবেল।
রুবির মা হালিমা খাতুন বলেন, “আমার মেয়েটাকে ওরা বছরের পর বছর ধরে অত্যাচার করে পাগল বানিয়ে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এমনিতেই মেয়েটি এখন পাগল, তার উপর আবার ছয় মাসের গর্ভবতী। মেয়েটিকে নিয়ে এখন আমি কোথায় যাব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।”
চিকিৎসা করানোর টাকাও তাদের কাছে নেই বলে জানান হালিমা।
হালিমা আরও বলেন, তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিষয়টি জানালে তার স্বামী রুবির সঙ্গে সংসার করবে না বলে জানায়। এ সময় জয়নাল চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে রুবিকে তালাক দিয়ে বিষয়টি মীমাংসারও চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে রুবির স্বামী জয়নালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
বালিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, “উভয়পক্ষই আমার কাছে এসেছিল। আমি বিষয়টির মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”