কাওড়াকান্দির ঘাট যাচ্ছে কাঁঠালবাড়ি

কাওড়াকান্দির যে ঘাট ঘিরে গত কয়েক দশক সকাল-সন্ধ্যা ছিল দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার হাজারো যাত্রীদের আনাগোনা; তা ইতিহাস হতে চলেছে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2017, 04:55 AM
Updated : 15 Jan 2017, 04:55 AM

কাওড়াকান্দি ঘাট চলে যাচ্ছে কয়েক কিলোমিটার দূরে কাঁঠালবাড়িতে। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান রোববার নতুন এ ঘাটের উদ্বোধন করবেন।

কাঁঠালবাড়ি থেকে ফেরি ছেড়ে পদ্মার ওপারে আগের শিমুলিয়া ঘাটেই থামবে। এ রুটের নামকরণ হয়েছে শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ি ইলিয়াস চৌধুরী ফেরি রুট।

অভ‌্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বলছে, নতুন ঘাট যাত্রীদের অন্তত পাঁচ কিলোমিটার যাত্রা কমিয়ে দেবে, সময় বাঁচবে আধা ঘণ্টা। দূরত্ব কমে যাওয়ার কারণে শতশত কোটি টাকার জ্বলানি সাশ্রয় হবে।

বিআইডব্লিউটিএর পুরকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুন-অর-রশীদ অপু জানান, এরই মধ্যে নতুন ঘাটের পার্কিং ইয়ার্ড, লঞ্চ জেটি, প্যাসেঞ্জার লোডিং, টিকেট কাউন্টার, টয়লেট কমপ্লেক্স, পুলিশ বক্স, তীর রক্ষা, লঞ্চ জেটি, অভ্যন্তরীণ রাস্তাসহ আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া রো রো ফেরি পন্টুন ও অন্যান্য ফেরির পন্টুন বসানোর কাজও শেষ হয়েছে। ফেরির পাশাপাশি ৮৬টি লঞ্চ ও তিন শতাধিক স্পিডবোটও এ ঘাট থেকে এখন চলাচল করবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ঘাট স্থানান্তরে বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশল বিভাগের প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান হারুন-অর-রশীদ অপু। পন্টুন স্থাপনসহ ও ড্রেজিংয়ের ব্যয় এর মধ‌্যে ধরা হয়নি।

গত ৮ জানুয়ারি সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের এ্যাপ্রোচ সড়ক আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দিলে কাঠাঁলবাড়ি থেকে অনানুষ্ঠানিক ফেরি পারাপার শুরু হয়।

বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক খন্দকার খালিদ নেওয়াজ জানান, এখনও কাওড়াকান্দির চারটি ঘাট থেকে দুটি কাঠাঁলবাড়িতে নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই বাকি দুই ঘাটও স্থানান্তর করা হবে।

উল্টো দিকে শিমুলিয়ায় আরও একটি ঘাট বাড়ানো প্রয়োজন জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, দুই তীরে ঘাট সমান হলে পারাপারের গতি বাড়বে।

পদ্মা সেতু চালুর দুই বছর আগেই নতুন ফেরিঘাট চালু হওয়ায় খুশি সাধারণ যাত্রীরা। যদিও অনেক বলছেন, নতুন ঘাট কাঁঠালবাড়িতে না করে নাওডোবায় হলে আরও চার কিলোমিটার দূরত্ব কমানো যেত।

কর্মকর্তারা জানান, পদ্মাসেতুর জন্যই কাওড়াকান্দি থেকে ঘাট সরিয়ে কাঁঠালবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জাজিরার সীমান্তবর্তী মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে ঘাট সরে যাওয়ায় বানাতে হয়েছে পাঁচচর পর্যন্ত সংযোগ সড়ক।

সড়কের ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিলোমিটারের কাজ এরইমধ‌্যে শেষ হয়েছে। পাকুর পাথর ব্যবহার করে বানানো এ সড়কের মাত্র ৮ কিলোমিটার ব্যবহার হচ্ছে ফেরি ঘাটের জন্য।

পদ্মা সেতুর জন্য সেতু বিভাগ নাওডোবা-পাঁচচর ও বাংলাবাজার-পাঁচচরের পথে যে দুটি অ্যাপ্রোচ সড়ক তৈরি করেছে, সেগুলো দিয়েই এ ঘাট থেকে ফেরির যানবাহন পাঁচচর পৌঁছাবে ও ঘাটে আসবে।

জাজিরা সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাইট ইঞ্জিনিয়ার সাইফুর রশীদ জানান, আবুল মুনেম ঠিকাদারি কোম্পানি তিন বছরের চেষ্টায় মূল পদ্মাসেতুর জাজিরা সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করছে। ১২০০ কোটি টাকার এ সংযোগ সড়কে ২০টি কালভার্ট, আটটি আন্ডারপাস ও পাঁচটি ছোট সেতু রয়েছে।