রোববার দুপুরে রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত পরিদর্শক মো. মাহবুবুর রহমান।
আঁখি হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান; যুবলীগের জেলা কমিটির সাবেক সদস্য। বর্তমানে দলে কোনো পদ নেই তার। আঁখির মদের কারবারও রয়েছে।
মাহবুবুর বলেন, আঁখিকে শুক্রবার আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। রোববার দুপুরে রিমান্ড আবেদনের উপর শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ঢাকা থেকে আঁখিকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে গত ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরের গৌরমন্দির ভাংচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গৌরমন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে করা এই মামলার সকল আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়।
ফেইসবুকে ‘ইসলাম অবমাননার’ ছবি পোস্ট করার অভিযোগে গত বছরের ৩০ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় ১৫টি মন্দিরসহ হিন্দুদের শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
হরিপুর ইউনিয়ন থেকে ১৪-১৫টি ট্রাক ভরে মানুষ আসার পর নাসিরনগরের হিন্দু পল্লীতে হামলা হয়। যেসব ট্রাকে হামলাকারীরা এসেছিল চেয়ারম্যান আঁখি সেগুলোর ব্যবস্থা ও অর্থের যোগান দিয়েছিলেন বলে তথ্য মিলেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে বেকায়দায় ফেলতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সমর্থকরা নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়ি-মন্দিরে হামলার নেপথ্যে ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
পুলিশ আঁখিকে খুঁজলেও এতদিন তিনি লুকিয়ে ছিলেন। গত ১ জানুয়ারি তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, তার চার দিনের মধ্যে আঁখি ধরা পড়েন।
হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় বারোয়ারি মন্দিরের পুরোহিতসহ দুই ব্যক্তি দুটি মামলা দায়ের করেন। প্রত্যেক মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে আসামি করা হয়।
এরপর কয়েকজনের বাড়িতে কয়েক দফা আগুন দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় দায়ের মোট আট মামলায় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।