শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের কারণে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ ঘটনায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও বিজিবি পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া বিজিবির কয়েকজন সদস্যকে প্রত্যাহার করে অন্য স্থানে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল শহরে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বিজিবি সদস্যদে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পথচারীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন এবং বেশ কিছু দোকানপাট ও যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
পরিবহন শ্রমিকদের উপর ‘হামলার’ বিচার এবং গাড়ি ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘ভাংচুরে’ ক্ষতি পূরণের দাবিতে শ্রীমঙ্গল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এবং ব্যবসাযী সমিতি এ ধর্মঘট ডাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে শ্রীমঙ্গলে স্থানীয় সব পরিবহন বন্ধ রয়েছে। শহরের প্রায় দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।
এ কারণে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটক ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিকালে শ্রীমঙ্গলের চৌমুহনায় পরিবহন শ্রমিক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিজিবি থেকে প্রত্যাহার ও শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
সমাবেশে শ্রীমঙ্গল পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ময়না মিয়া বলেন, আগামী ৮ জানুয়রি পর্যন্ত মৌলভীবাজার পুরো জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। তাদের এ দাবি না মানলে সিলেট বিভাগে কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এছাড়া রাত ৯টায় শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতি সভা করে তাদের পরবর্তী কর্মসূচি জানাবেন বলে জানান শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ লুৎফুর রহমান।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক তোফালে ইসলাম জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারুখ আহমদকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন মৌলভীবাজার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শ্রীমঙ্গল থানার ওসি।
পর্যটকদের বিষয়টি বিবেচনা করে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা ১৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিজিবি কুমিল্লা সেক্টরের কমান্ডারকে প্রধান করে এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। বিকালে বিজিবির তদন্ত টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছে।
বিজিবি শ্রীমঙ্গল সেক্টর কমান্ডার কর্নেল জাকির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ ঘটনায় জড়িতদেরকে শুক্রবার বিকালে ক্লোজ করে শ্রীমঙ্গল সদরদপ্তর থেকে সরাইল রিওজনে পাঠানো হয়েছে।