ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্রলীগের মিছিলে সংঘর্ষ, আহত ১০

ঠাকুরগাঁও শহরে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলে দুপক্ষের সংঘর্ষে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2017, 12:10 PM
Updated : 4 Jan 2017, 04:47 PM

বুধবার দুপুর ১টার দিকে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে বলে সদর থানার ওসি মশিউর রহমান জানান।

স্থানীয়রা বলছেন, কেন্দ্র ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহবুব হোসেন রনি এবং ঠাঁকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ দবিরুলের সমর্থক সিরাজী মিজান গ্রুপের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনায় আহত সদর থানার এসআই আবু হানিফসহ কয়েকজনকে ঠাকুরগাঁও সদর ও বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলীয় কার্যালয় দখল করে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কেক কাটেন মিজান গ্রুপের নেতাকর্মীরা।

সকালে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় অংশ নিতে রাতে দলীয় কার্যালয়েই অবস্থান করছিলেন তারা।

স্থানীয়দের ভাষ্য, একই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুর ১টার দিকে মাহবুব হোসেন রনির পক্ষের লোকজন শহরের বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে একটি শোভযাত্রা বের করেন।

বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শোভাযাত্রাটি স্থানীয় আমতলি এলাকায় পৌঁছলে মিজান সমর্থকদের সঙ্গে রনির সমর্থকদের সংঘর্ষ বেধে যায়। তারা দেশি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। 

এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে।

ওসি মশিউর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছয় রাউন্ড রাবার বুলেট ও ১০ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করলে উভয় দলের লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরে বাড়তি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে রনির দলের লোকজন  লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংঘর্ষ থামাতে গেলে রনির লোকজন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক সাদেক কুরায়ইশী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়সহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে লাঞ্ছিত করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই।”

সংঘর্ষের বিষয়ে রনি বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শোভাযাত্রা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করছিলাম। এ সময় মিজান গ্রপের নেতা-কর্মীরা আমাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।”

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সিরাজী মিজান বলেন, “দুপুরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দলীয় কার্যালয় থেকে র‌্যালি বের করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় রনির দলের লোকজন আমাদের উপর ইটপাটকলে নিক্ষেপ করে।”

 

এ কারণে তাদের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পাল্টা ধাওয়া করে বলে মিজানের ভাষ্য।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ দবিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক।

এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।