নাসিরনগরের ‘আপত্তিকর’ ছবি এডিট হয় জাহাঙ্গীরের কম্পিউটারে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের রসরাজের মোবাইল ফোন থেকে ধর্মীয় অবমাননার ছবি আপলোড হয়নি বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিপীযূষ কান্তি আচার্যবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2017, 04:19 PM
Updated : 16 Jan 2017, 10:31 AM

এই ছবিটা জাহাঙ্গীর আলমের কম্পিউটারে এডিট হয়েছিল বলে ওই প্রতিবেদন বলা হয়।

তবে জাহাঙ্গীরের কম্পিউটারে এডিট করা ছবিটি তার ফেইসবুকে আপলোড করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি প্রতিবেদনে।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর ফেইসবুকে ‘ইসলাম অবমাননার’ ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ৩০ বছর বয়সী রসরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই অভিযোগ তুলে পরদিন ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে ১৫টি মন্দিরসহ হিন্দুদের শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

পরে আরও কয়েক দফায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত আটটি মামলায় ১০৪ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।

এ ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রসরাজ ও জাহাঙ্গীরের দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। প্রতিবেদন দুটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে পাঠিয়েছে পিবিআই।

সোমবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ রসরাজের তদন্ত প্রতিবেদন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে জমা দিয়েছে। তবে জাহাঙ্গীরের তদন্ত প্রতিবেদন এখনও আদালতে জমা দেওয়া হয়নি।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মফিজ উদ্দিন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান জানান, রসরাজের মোবাইল ফোন ও মেমোরি কার্ড জব্দ করে পরীক্ষার জন্য আলামত ও নমুনা ছবি গত ১৬ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। পিবিআইয়ের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তার প্রতিবেদন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ওই প্রতিবেদন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে জমা দেয়।

পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গৃহীত আলামত ও ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিটির কোনো অস্তিত্ব রসরাজের মোবাইল ফোন ও মেমোরি কার্ডে পাওয়া যায়নি।

অপর রিপোর্টে জাহাঙ্গীরের কম্পিউটারে ছবিটি এডিট করা হয় এবং কিছুক্ষণ সংরক্ষণের পর তা মুছে ফেলা হয়। তবে এই ছবিটি তার কম্পিউটার থেকে পোস্ট হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা হয়নি প্রতিবেদনে।

ঘটনার শুরু থেকেই অভিযোগ ওঠে, জাহাঙ্গীর আলম তার আল আমিন সাইবার পয়েন্ট অ্যান্ড স্টুডিও থেকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিটি প্রিন্ট করে লিফলেট আকারে এলাকায় বিতরণ করেন। জাহাঙ্গীর আলম ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এটি স্বীকারও করেন।

এ ঘটনার জন্য সন্দেহভাজন যুবক জাহাঙ্গীর আলমকে (৩০) গত বছরের ২৮ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।

জাহাঙ্গীর আলম হরিণবেড় বাজারের আল আমিন সাইবার ক্যাফের স্বত্বাধিকারী এবং নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের বেণু মিয়ার ছেলে।

রসরাজ ও জাহাঙ্গীর এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে আটক আছেন।