শনিবার তনুর বাবা মো. ইয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেখতে দেখতে ৯ মাস পার হলেও সিআইডি আমাদের কোনো আশার খবর দিচ্ছে না।
“আল্লাহ কাছে বিচার চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তবে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে দু-একটা কথা বলতে চাই। এতে করে আমাদের কষ্টগুলো প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারতাম।”
কুমিল্লা সেনানিবাসের সরকারি বাসায় এখনও নানামুখী নজরদারিতে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, জড়িতদের শনাক্ত করা বা তদন্তের অগ্রগতি কোনো বিষয়েই মুখ খুলতে চাচ্ছেন না সিআইডির কর্মকর্তারা।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্দেহভাজন হিসেবে তিনি যাদের নাম বলেছেন, গণমাধ্যমে যাদের নাম এসেছে, তাদের গ্রেপ্তার করলেই হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হবে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে শুক্রবার কুমিল্লা নগরীর পূবালী চত্বরে প্রতিবাদী সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চ। তবে সমাবেশটি হয়নি।
এই বছরের ২০ মার্চ খুন হন নাট্যকর্মী তনু (১৯)। ওইদিন রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি ঝোঁপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল বলে ধারণা করছিলেন স্বজনরা।
সেনানিবাসে কলেজছাত্রীর লাশ পাওয়ার পর তা নিয়ে সারাদেশে ক্ষোভের ঝড় বয়ে যায়। এরপর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের ধর্ষণের কোনো আলামত না মেলা এবং হত্যার কারণ উদ্ঘাটন না হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়।
প্রশ্ন ওঠার পর আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের আড়াই মাস পর পুলিশকে প্রতিবেদন দেয় চিকিৎসক দল।
ওই প্রতিবেদনে ‘সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স’ হওয়ার কথা বলা হয়। তবে তা ধর্ষণ কি না সে বিষয়টি এড়িয়ে যান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা প্রসাদ সাহা, যার নেতৃত্বে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হয়।
এরপর ডিএনএ পরীক্ষা শেষে তদন্ত সংস্থা সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুনিরা তনুকে ধর্ষণও করেছিল।
তবে নয় মাসেও কোনো খুনিকে শনাক্ত করা যায়নি; এই মামলায় কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি।
কুমিল্লা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার রায় শনিবার সাংবাদিকদের জানান, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, “এখনও আমরা আসামি শনাক্ত করতে পারিনি। তবে আমরা আসামিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।”