জেলা ভোটে নানা স্থানে সংঘর্ষ, হামলা ও বোমাবাজি

জেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় এক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2016, 01:56 PM
Updated : 28 Dec 2016, 06:26 PM

বুধবার সারাদেশে ৬১ জেলায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

৬১টি জেলার মধ‌্যে ৩৮টিতে বুধবার চেয়ারম‌্যান নির্বাচনে ভোট দেন সংশ্লিষ্ট জেলার সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।

২১টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ইতোমধ‌্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। কুষ্টিয়া ও বগুড়ায় চেয়ারম‌্যান পদে নির্বাচন স্থগিত আছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

মাদারীপুর

রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট শুরুর আগেই মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে রাজৈর থানার ওসি কামরুল হাসান জানিয়েছেন।

মাদারীপুরে হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষ হয়

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন আবদুস সালাম মাস্টার। তার সমর্থক রাজৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব মিয়া চার-পাঁচজন লোক নিয়ে হোসেনপুর ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন।

এতে  প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইকবাল হাসানের সমর্থকেরা বাধা দিলে মারামারি বাধে।

তবে সকাল ৯টার মধ্যেই পুলিশ মারামারি ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ভোট গ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টি করে বলে জানান ওসি।

চাঁদপুর

চাঁদপুরের কচুয়ার একটি কেন্দ্রে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ইউনিয়ন পরিষদের এক চেয়ারম্যানসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।  

কচুয়া থানার ওসি একেএমএস ইকবাল জানান, দুপুরে তেগুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এই সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে পাঁচ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে।

এরা হলেন- বিতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসহাক শিকদার, জিসান আহমেদ (৩৫), শাহীন (৩২), মামুনুর রশীদ মুন্সী (৩০), মাসুদুর রহমান (৩৩) ও শিশির (৩৪)।

আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ওসি বলেন, পালাখাল রুস্তম আলী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য প্রার্থী হারুন পাটওয়ারী ও মো. শাহজাহানের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। একস পর্যায়ে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভোট চলাকালে চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা পনির উদ্দিন আহমেদের মাইক্রোবাসে বোমার বিস্ফোরণ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন।

বুধবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে উলিপুর থানার ওসি এস.কে আব্দুল্লাহ আল সাইদ জানান।

উলিপুরে এই মাইক্রোবাসটি ভাংচুর করা হয়

আহতরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক আমসা আমিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী পনির উদ্দিন আহম্মেদ, মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন ও মাইক্রোবাসের চালক।

আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

বিডিনিউজ টোরয়ন্টিফোর ডটকমকে পনির উদ্দিন বলেন, “প্রতিপক্ষের লোকজন আমার মাইক্রোবাসে ভাংচুর করলে চারজন আহত হয়।”

প্রত্যক্ষদর্মীদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, পনির উদ্দিনকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি দুর্গাপুর ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছলে দুবৃর্ত্তরা ইট নিক্ষেপ করে। এরপর উলিপুর এম এস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে পোস্ট অফিস মোড়ে দুবৃর্ত্তরা মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।

ঘটনার পর পনির উদ্দিনকে বহনকারী মাইক্রোবাসটি পুলিশ পাহারায় কুড়িগ্রাম জেলা শহরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি।

মাগুরা

মাগুরার শ্রীপুরে ভোট গ্রহণের শেষ সময়ে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেন্ট ও সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

কুতুব উল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি নামে ওই প্রার্থীর অভিযোগ, দুপুর ২টায় ভোট গ্রহণের শেষ দিকে কেন্দ্রের বাইরে ‘সরকার দল সমর্থিত প্রার্থীর’ লোকেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুইজন আহত হন।

মিতুল মিয়া ও তহিদুল ইসলামকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে কুতুব জানান।

তিনি বলেন, এ হামলা ও ভোট গ্রহণে অনিয়মের অভিযোগে তিনি শ্রীপুর উপজেলার ২ নম্বর কেন্দ্রর ভোট স্থগিত করার জন্য রিটানিং অফিসাররের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন করেছেন।

তবে  শ্রীপুর থানার ওসি রেজাউল ইসলামের ভাষ্য, ব্যাক্তিগত বিরোধ নিয়ে কেন্দ্রের অনেক বাইরে তাদের উপর এ হামলার ঘটনা ঘটে, এটা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো বিষয় নয়।