ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য এলাকার মানুষের কাছ থেকে ‘অবৈধভাবে’ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তা ও তা দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিমো. শাকিল আহমেদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2016, 12:04 PM
Updated : 27 Dec 2016, 12:06 PM

এরা হলেন রাণীংশকৈল উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের পরিচালক নাসিরুল ইসলাম নাসির, স্থানীয় হুমায়ুন কবির ও আব্দুল হালিম।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি নাসিরুল ইসলাম জানন না বলে দাবি করেছেন।

রাণীশংকৈলের হোসেনগাঁও ইউনিয়নের রাউতনগর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগে বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে নাসিরুলের নির্দেশে হুমায়ুন কবির ও আব্দুল হালিম ওই গ্রামের ৩৬০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে সাত হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার করে প্রায় ২৭ থেকে ২৮ লাখ টাকা আদায় করেন।

কিন্তু বছর গড়িয়ে গেলেও গুচ্ছগ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ যায়নি বলে তারা জানান।

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বিদ্যুতের পিলার পুঁতে রাখা হয়েছে। দেখে বোঝা যায় বেশ আগেই পোঁতা হয়েছে। তবে এখনও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়নি।

রাউতনগর গুচ্ছগ্রামের আব্দুস সাত্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নাসিরুলের সঙ্গে তাদের কয়েক দফা বৈঠকে প্রত্যেক সংযোগ বাবদ ছয় থেকে সাত হাজার টাকা দিতে বলা হয়।

“বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হুমায়ুন ও হালিম মিলে নাসিরের পক্ষে গ্রামের ৩৬০টি পরিবারের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা তোলেন।”

ওই গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, “এক বছর আগে ফসল বিক্রি করে স্থানীয় আব্দুল হালিম ও হুমায়ুনের কাছে সাত হাজার ১০০ টাকা দিলেও এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পাইনি।”

একই অভিযোগ করে রিকশাচালক তসলিম উদ্দীন বলেন, “অনেক কষ্টে সাত হাজার টাকা জোগাড় করিছু, ওইলা টাকা হুমায়ুন আর হালিমের হাতত দিছু।

“এক বছর চলে গেল, ওমরা এলাও হামার বাড়িত কারেন্ট দেয়নি। কারেনের কাথা কহিলে আইজ হবে কাইল হবে কহে দিন পার করেছে।”

এছাড়া ওই গ্রামের গৃহবধূ জয়নুন এবং মিজানুর রহমানও বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য টাকা দিলেও সংযোগ পাচ্ছেন না বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুমায়ুন কবির বলেন, “বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনে ইঞ্জিনিয়ারের খরচ, পিলার ও মিটার স্থাপন ও ঠিকাদারের খাওয়া-দাওয়া ও থাকার খরচ বাবদ এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে।”

আব্দুল হালিম বলেন, “এলাকার মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় আমরা নিজেরাই এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা আদায় করেছি। এসব টাকা পল্লী বিদ্যুতের পরিচালকের কাছে দেওয়া হয়।”

এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে নাসির বলেন, “টাকা তোলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”

ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার খালেকুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিদ্যুতের প্রতিটি নতুন সংযোগের জন্য অফেরতযোগ্য আবেদন ফি ১০০ টাকা দিতে হয়। এর বাইরে সদস্য ফি হিসেবে ৫০ টাকা ও মিটার জামানত হিসেবে ৬০০ টাকা নেওয়া হয়, যা ফেরতযোগ্য।

গুচ্ছগ্রামের নতুন সংযোগ বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়য়ে খালেকুজ্জামান বলেন, “এলাকাবাসীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”