রোববার রাতে বটতৈল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এহসানুল করিম বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে কাশেম খলিফার স্বজনরা ‘নির্যাতন করে হত্যার’ অভিযোগে পুলিশ ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
রোববার বিকালে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট মাদ্রসাপাড়ার বাড়ি থেকে কাশেম খলিফাকে (৬৭) আটক করে। পরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান।
ময়না তদন্ত শেষে সোমবার সকালে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাদ আছর কবুরহাট গোরস্থানে কাশেম খলিফার লাশ দাফন করা হয়।
কাশেম খলিফার ছেলে জামিরুল বলেন, “পুলিশ অন্যায়ভাবে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। বাবার হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আমরা আদালতে যাব।
সোমবার লাশ দাফন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সকালে বাবার নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও যারা টাকা দিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করব।”
কাশেমের পুত্রবধূ রিপা খাতুন বলেন, “পুলিশ তাজা মানুষটাকে ধরে চোখের সামনে পিটিয়ে মেরে ফেলল। আমরা হত্যাকারী পুলিশের ফাঁসি চাই।”
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজ আল আসাদ বলেন, কবুরহাট ক্যানেলের একটি সরকারি জমি আমজেদ হোসেনের স্ত্রী বানু পারভীনের নামে ১৯৯৭ সালে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। প্রতিবেশী কাশেম খলিফা (মৃত ব্যক্তি) ওই জমিটি তার রেকর্ডভুক্ত জমি বলে দাবি করে আসছিলেন। এনিয়ে মামলাও হয়। মামলায় কুষ্টিয়া আদালতে দুইবার কাশেম হেরে যান।
“রোববার ওই জমিটা আমজেদ পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়ার সময় কাশেম খলিফা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের উপর হামলা চালান। এ ঘটনায় বটতৈল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এহসানুল করিম বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।”
কাশেম খলিফার মেয়ে রিনা খাতুন বলেন, “মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আমরা হাই কোর্টের মামলার কাগজপত্র পুলিশকে দেখানোর অনেক চেষ্টা করেছি। পুলিশ কোনো কিছু দেখতে রাজি হয়নি।”
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি শাহাবুদ্দিন চৌধুরী বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কাশেম খলিফাসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মামলার বাদী এহসানুল করিমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ওসির সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ পুলিশ রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে কাশেম খলিফাকে হত্যা করেছে।
পুলিশের ভাষ্য, গ্রেপ্তার করে গাড়িতে করে নিয়ে আসার পথে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।