আশুলিয়ায় অসন্তোষ: ১৫০ ‘নাশকতাকারী চিহ্নিত’

ঢাকার আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক শিল্পে বিশৃঙ্খলা, ভাংচুর ও নাশকতা সৃষ্টির ‘পেছনে থাকা’ অন্তত ১৫০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ।

সেলিম আহমেদ সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2016, 01:49 PM
Updated : 26 Dec 2016, 01:49 PM

পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার খুলে দেওয়া পোশাক কারখানা পরিদর্শনে আশুলিয়া এসে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের পর থেকে মোট ১০টি মামলা হয়েছে। দুটির বাদী পুলিশ ও আটটির বাদী বিভিন্ন পোশাক কারখানা মালিক কর্তৃপক্ষ। মামলা হওয়ার পর থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

“এসব মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্য থেকে নাশকতাকারীদের চিহিৃত করা হয়। এ পর্যন্ত ১৪৭ থেকে ১৫০ জন নাশকতাকারীকে চিহিৃত করা হয়েছে।”

শ্রমিক বরখাস্তের বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, “সাময়িক বরখাস্তকৃত কোনো শ্রমিক যদি মনে করেন তার উপর অন্যায় বা অবিচার করা হয়েছে তাহলে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর দরখাস্ত করলে আমরা তদন্ত করে মালিকপক্ষকে বলব তাকে যেন কাজে পুনর্বহাল করে।”

আর সত্যি সত্যি যদি কেউ ‘কালপ্রিট’ বা ‘ইন্ধনদাতা’ হয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, বলেন তিনি।

কারখানা খুলে দেওয়ার প্রথম দিন শ্রমিকের উপস্থিতির বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, একটি কারখানার শ্রমিক সংখ্যা ২৭০০, উপস্থিত হয়েছে ২৫০০ জন। আরেকটির শ্রমিক সংখ্যা ১৩০০, উপস্থিত হয়েছে ১২৮৭ জন। যারা অনুপস্থিত আছে তারা ৪/৫ দিন ছুটি পেয়ে অনেকেই বাড়ি চলে গেছে। তাছাড়া এমনিতেই বিভিন্ন কারণে ১০/১২ জন অনুপস্থিত থাকে।

“সব মিলিয়ে শ্রমিকের উপস্থিতি আমরা স্বাভাবিক ধরে নিচ্ছি।”

বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবিতে সপ্তাহকাল বিক্ষোভের পর গত সোমবার আশুলিয়ার ২৫ কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর কয়েকজন মন্ত্রী কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারা বিফল হলে মঙ্গলবার ৫৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন‌্য বন্ধ ঘোষণা করে বিজিএমইএ।

সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান রোববার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বন্ধ কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও ৩০টি শ্রমিক সংগঠনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সোমবার থেকে বন্ধ কারখানাগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

আশুলিয়া থানার ওসি মহসিনুল কাদির জানান, ১০টি মামলায় অন্তত দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাগুলো গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আর থানা পুলিশ তদন্ত করছে।

গ্রেপ্তার ২২ জনের মধ্যে মহিলা দলের নেত্রী, ঝুট ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন বলে জানান তিনি।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত হা-মীম গ্রুপ, ফাউন্টেন গামের্ন্টস ও উন্ডি অ্যাপারেলস কর্তৃপক্ষ ৩৪৭ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।