যুদ্ধাপরাধে মৃত‌্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাজাকার মান্নানের মৃত‌্যু পলাতক অবস্থায়

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত‌্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কিশোরগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার গাজী আবদুল মান্নান পলাতক অবস্থায় নারায়ণগঞ্জের কাচপুরে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Dec 2016, 05:49 AM
Updated : 19 Dec 2016, 01:35 PM

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার ওসি জাকির রাব্বানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আবদুল মান্নান কাচপুরে মারা গেছেন বলে তার পরিবার নিশ্চিত করেছে। আমরা বিস্তারিত তথ্য  জানার চেষ্টা করছি।”

পারিবারিক গোরস্তানে সোমবার দুপুর ২টায় তার লাশ দাফন করা হয়।

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী, করিমগঞ্জের চরপাড়া গ্রামের মান্নানের বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চার দশক আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ঘটানো যুদ্ধাপরাধের বিচার তিনি এড়িয়ে গেছেন পালিয়ে থেকে।  

একাত্তরে অপহরণ, নির্যাতন, হত্যার মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে চলতি বছর ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মান্নানসহ কিশোরগঞ্জের চার রাজাকার সদস্যেয়র প্রাণদণ্ডের রায় দেয়, আরও একজনকে দেওয়া হয় আমৃত্যু কারাদণ্ড।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা মান্নান একাত্তরে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার বনে যান এবং রীতিমতো সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। সহযোগীদের নিয়ে তিনি নিজের এলাকায় নানা মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান উঠে আসে আদালতের রায়ে।

ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মান্নানসহ চার আসামির মৃত্যুপদণ্ড কার্যকর করতে বলা হয় আদালতের রায়ে।

এ মামলার পাঁচ আসামির মধ্যের মৃত্যুজদণ্ডের আসামি শামসুদ্দিন আহমেদই কেবল কারাগারে রয়েছেন।

সর্বোচ্চ সাজার আদেশ পাওয়া সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মো. নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজউদ্দিন এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডের আসামি আজহারুল ইসলামের কোনো খোঁজ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বের করতে পারেনি।

ট্রাইব্যুিনালের রায়ে করিমগঞ্জের বিদ্যানগর ও আয়লা গ্রামে ৮ জনকে হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে মান্নানের মৃত্যুেদণ্ডের রায় আসে। এছাড়া আতকাপাড়া গ্রামের মো. ফজলুর রহমান মাস্টারকে অপহরণ করে করিমগঞ্জ ডাকবাংলোতে শান্তি কমিটির কার্যালয়ে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যা এবং পূর্ব নবাইদ কালিপুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক ও রূপালীকে অপহরণ করে নির্যাতন ও হত্যার ঘ্টনায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে তার আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়। আতকাপাড়া গ্রামে আক্রমণ করে ২০-২৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের দায়ে তাকে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।

গতবছর ১২ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য  দিয়ে মান্নানসহ পাঁচ আসামির যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর চলতি বছর মে মাসে রায় দেয় আদালত।