নড়াইল মুক্ত দিবস ১০ ডিসেম্বর

নড়াইল মুক্ত দিবস ১০ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করে নড়াইলকে মুক্ত ঘোষণা করেন মুক্তিযোদ্ধারা।

মাহবুবুর রশিদ, নড়াইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2016, 04:47 AM
Updated : 10 Dec 2016, 05:28 AM

দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা কমান্ড কাউন্সিল, চিত্রা থিয়েটারসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের স্মরণ করা হয়, বের করা হয় শোভাযাত্রা।

নড়াইল সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শরীফ হুমায়ুন কবীর বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে নড়াইলের জামায়াত নেতা মওলানা সোলায়মানের নেতৃত্বে শান্তি বাহিনী গঠিত হয়। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় কয়েক হাজার মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করা হয়।

“ডিসেম্বরের প্রথম দিকেই নবগঙ্গা নদীর উত্তর ও পূর্বাঞ্চল হানাদারমুক্ত হয়। লোহাগড়া থানার হানাদার বাহিনীর ঘাঁটিকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হলে তারা অমান্য করে। ৭ ডিসেম্বর লোহাগড়া থানা আক্রমণ করা হয়। যুদ্ধের পর ৮ ডিসেম্বর লোহাগড়া মুক্ত হয়।”

এরপর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর নড়াইলের ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হন বলে জানান শরীফ হুমায়ুন কবীর।

তিনি বলেন, ৮ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণে মাছিমদিয়া গ্রামে পুলিশ ও রাজাকারদের ওপর হামলা চালায়। যুদ্ধে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা জয়পুরের মিজানুর রহমান শহীদ হন। ৯ ডিসেম্বর রাতে ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ পাশে দুই পক্ষের যুদ্ধ হয়।

নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পূর্ব পাশে চিত্রা নদীর সাবেক লঞ্চঘাটে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত একাত্তরের বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ

“যুদ্ধে বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। এরপর শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত পাক মিলিটারি ও তাদের সহযোগীদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। তারা অস্বীকার করলে মুক্তিবাহিনী হামলা চালায়।”

এখানে কয়েকজন পাকসেনা নিহত ও অন্যরা আটক হয় বলে জানান শরীফ হুমায়ুন কবীর।

তিনি বলেন, রাতে প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে বিজয় উল্লাস করেন। ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় নড়াইল শহর। ১০ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় নড়াইলকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নড়াইলের পাঁচজনকে বীরত্বের খেতাব দেওয়া হয়। তারা হলেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ, বীর উত্তম মুজিবুর রহমান, বীর বিক্রম আফজাল হোসেন, বীর প্রতীক খোরশেদ আলম ও বীর প্রতীক মতিয়ার রহমান।