বিপুল বিশ্বাস নামে ওই মালিককে রোববার বিকালে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা ও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জিলাল হোসেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, অনুমোদনহীন ধানবীজ বাজারজাত করেছেন বিপুল বিশ্বাস। তার বীজ কিনে কৃষকরা প্রতারিত হয়েছেন। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
“এ কারণে আদালত তাকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা ও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে।”
এর আগেও ভ্রাম্যমাণ আদালত বিপুলকে ভেজাল ধানবীজ বাজারজাত করায় তিনবার জেল-জরিমানা করে বলে জানান কেটালীপাড়া উপজেলার ভাঙ্গারহাট নৌপুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই জহিরুল ইসলাম।
কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের হালিম শেখ অভিযোগ করেন, “আমি ঘাঘর বাজারের বীজ ব্যবসায়ী চক্রধর মণ্ডলের কাছ থেকে মা-মনি নামের ১০ কেজি ধানবীজ ক্রয় করে বীজতলা করেছিলাম ।
“আমার সেই ধান গজায়নি। আমার মতো আরও অনেকে প্রতারিত হয়েছে। এখন আবার বীজতলা দিতে হবে। ফলে ধান আবাদ পিছিয়ে যাবে। এতে ধান প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।”
একই উপজেলার ঘাঘর বাজারের বীজ ব্যবসায়ী চক্রধর মণ্ডল বলেন, “আমি মা-মনির ২০ বস্তা ধানবীজ বিক্রি করেছি। বীজ গজায়নি বলে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে।”
এ ব্যাপারে বিপুল বিশ্বাস বলছেন, “বীজ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের জন্য আমার কোম্পানির নিবন্ধন রয়েছে। আমি জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসের তত্ত্বাবধানে সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বীজ উৎপাদন করেছি।”
নাম না প্রকাশ করে মাঠপর্যায়ের একজন কৃষিকর্মকর্তা বলেন, গোপালগঞ্জ জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসকে দুই লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে মেসার্স মা-মনি বীজভাণ্ডার ওই বীজ বাজারজাত করেছে।
তবে বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, বিপুল বিশ্বাস সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই বীজ উৎপাদন করেছেন। পরীক্ষাগারেও তার বীজ উত্তীর্ণ হয়েছে। এ কারণে বীজ বাজারজাতকরণে তার কোনো আইনি বাধা ছিল না।
নাম প্রকাশ না করে পীড়ারবাড়ি বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, বিপুল পীড়ারবাড়ি বাজার থেকে ধান ক্রয় করে নিজের দোকানে ও বাড়িতে বসে প্রকাশ্যে প্যাকেট করে বাজারজাত করেন। এভাবে ধানবীজ বাজারজাত করার অপরাধে কয়েকবার জেলও খেটেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে এসে বিপুল আবার একই কাজ শুরু করেন।