বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি: ঘর-বাড়িতে ফাটল

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির অধিগ্রহণ করা এলাকার বাইরে কয়েকটি গ্রামে ঘর-বাড়িতে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2016, 09:16 AM
Updated : 26 Nov 2016, 09:16 AM

স্থানীয়রা বলেন, এলাকায় হঠাৎ পুকুর-ডোবা পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। যখন তখন মাটি কেঁপে ওঠে। এ কারণে গ্রামবাসীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের কারণে এর আগে জিগাগাড়ি ও কালুপাড়া গ্রামের পুরো এলাকা, পাতিগ্রাম, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর, বৈগ্রামের আংশিক এলাকার ঘর-বাড়িতে ফাটল ও ভুমিধস হয়।

২০১৪ সালে খনি কর্তৃপক্ষ ওই এলাকার ৬৪৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে, যেখানে বসতবাড়িও রয়েছে।

বড় পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরুর পর আশপাশের এলাকায় ছাইয়ের সৃষ্টি হয় এবং ভূমিতে দেখা দেয় ফাটল। এরপর সরকার ওই এলাকার মানুষকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে অন্য স্থানে সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর একনেকে ১৯১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়।

বাঁশপুকুর গ্রামের মজিবুল মন্ডল ও শিবরামপুর গ্রামের আব্দুল জব্বার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘর-বাড়ি যখন তখন প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে কেঁপে ওঠে। এ সময় আতংকিত গ্রামবাসী ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।

ঘর-বাড়ি ও মাটিতে ফাটল কয়েক মাস আগে থেকে দেখা গেলেও সম্প্রতি গ্রামের পুকুর-ডোবার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। ভুমি দেবে সাম্যাবস্থা নষ্ট হওয়ায় কোথাও কোথাও ঘরের দরজা-জানালা খোলা কিংবা বন্ধ করা যাচ্ছে না বা করতে কষ্ট হচ্ছে।

কয়লাখনির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে গঠিত ‘জীবন, পরিবেশ ও সম্পদ রক্ষা কমিটি’র আহবায়ক মশিউর রহমান বুলবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাঁশপুকুর, বৈদ্যনাথপুর, শিবরামপুর, পাতিগ্রাম, বৈগ্রাম, কাশিডাঙ্গা, কালুপাড়াসহ ৯টি গ্রামের মানুষ এখন আতংকে দিন কাটাচ্ছে। রাত-দিন যখন-তখন এলাকা প্রচণ্ড ঝাকুনিতে কেঁপে উঠছে। প্রতিটি ঘর-বাড়িতে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে।

অধিগ্রহণ করা এলাকার বাইরে নতুন করে ঘর-বাড়িতে ফাটলের বিষয়টি নিশ্চিত করে হামিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম মণ্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এলাকার মানুষ কয়লা উত্তোলনের বিরোধিতা করছে না, কিন্তু ঘর-বাড়িতে ফাটল দেখা দেওয়া ও পানি সংকট হওয়ার বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে।

এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি. (বিসিএমসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম আওরঙ্গজেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রামবাসীর দাবির বিষয়টি যদি সত্য হয়, তবে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এর আগেও যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেহেতু সেই অভিজ্ঞতায় সমস্যার সমাধান হবে।