রোববার পরীক্ষা শুরুর দিনে প্রথম বেঞ্চে বসে শিশুদের সঙ্গে ইংরেজি পরীক্ষা দেন গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের হোগলবাড়িয়া গ্রামের এ নারী।
তিনি উপজেলা হোগলবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।হোগলবাড়িয়া মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৯ নম্বর কক্ষে পড়েছে তার সিট।
বাছিরন নেছা বলেন, “সারা বছর মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। পরীক্ষা ও রেজাল্ট ভাল হবে আশা করছি।পড়তে খুব ভাল লাগে।যতদিন শরীর চলবে ততদিন পড়াশুনা চালিয়ে যাব “
তার বড় ছেলে মহির উদ্দীন বলেন, “বাড়িতে আমার দুই ছেলে আর মা মোট তিনজন স্কুলে লেখাপড়া করে। মায়ের লেখাপড়া নিয়ে আমাদের গর্ব হয়। মা যতদূর পড়তে চায়, আমরা সহযোগিতা করব।”
স্কুলের শ্রেণি শিক্ষক আনার কালি বলেন, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা তাকে নানি বান্ধবী বলে ডাকে।পড়াশুনায় মনোযোগী বাছিরন অল্পতে সবকিছু বুঝতে পারেন।
প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দিন বলেন, “বৃদ্ধ বয়স দেখে প্রথম বছর স্কুলে ভর্তি নিইনি। ভেবেছিলাম শিশু পরিবেশ নষ্ট হবে। খাপ খাওয়াতে পারবে না। দ্বিতীয় বছর পুনরায় অনুরোধ ও তার আগ্রহ দেখে স্কুলে ভর্তি নিতে বাধ্য হই।
ঝড়-বৃষ্টি-খরাতে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে অনুপস্থিত থাকলেও তিনি নিয়মিত স্কুলে আসতেন বলে জানান হেলাল উদ্দিন।
মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌফিকুজ্জামান জানান, বাছিরন এবারের পিইসি পরীক্ষায় সব চেয়ে বয়স্ক পরীক্ষার্থী।
বাছিরনের এমন অদম্য ইচ্ছা দেশের বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহ জোগাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কেন্দ্র পরিদর্শক জিয়া মোহাম্মদ আহসান মাসুদ বলেন, বাছিরন ৬৫ বছর বয়সে সমপানী পরীক্ষা দিয়ে যেমন সবাইকে অবাক করেছেন।তেমনি উত্তীর্ণ হয়েও সবাইকে অবাক করে দিবেন।