ঠাকুরগাঁওয়ে ভেরিফিকেশনে গিয়ে পুলিশের ফুলেল শুভেচ্ছা

পাবনার পর এবার ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশও ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তথ্য সংগ্রহে গিয়ে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিমো. শাকিল আহমেদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2016, 10:12 AM
Updated : 12 Nov 2016, 10:21 AM

পুলিশের এমন ভেরিফিকেশনে অভিভূত জেলার চাকরি প্রার্থীরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তাদের অনুভূতির কথা।

জেলা শহরের বসিরপাড়া এলাকার হামিদুর রহমানের ছেলে মাহাবুব হাসান বলেন, “এতদিন জানতাম পুলিশ ভেরিফিকেশন মানেই হয়রানি। ভালো খাওয়া-দাওয়া, টাকা-পয়সার লেনদেন, ইত্যাদি। কিন্তু এখন দেখলাম তার ঠিক উল্টোটা।

“শুক্রবার রাতে একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে এক লোক বলল, ‘আমি পুলিশ, আপনারা বাড়িতে থাকেন। আমরা আসছি।’ পুলিশ শুনেই বুঝেছিলাম, ভেরিভিকেশনে আসছে।”

এরপর তিনি তাড়াহুড়ো করে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন বলে জানান।

“বাবাকে সাথে নিয়ে শহরের কালিবাড়ি বাজার থেকে আপেল, মিষ্টি, দই ইত্যাদি নিয়ে আসলাম। পরিবারের সবাই মিলে খাবারগুলো তৈরি করে টেবিলে সাজিয়ে রাখলাম। কারণ একটাই। পুলিশ ভেরিফিকেশনে আসছে।”

পুলিশ দেখে তিনি মনে মনে খানিক ভয়ও পান বলে জানান।

“কিন্তু পুলিশকে দেখলাম ফুল ও মিষ্টি নিয়ে এসেছে। তো আকাশ থেকে পড়লাম আরকি।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ ও সদর থানার ওসি মশিউর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য পরিবারে সদস্যদের হাতে ফুলের তোড়া ও মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন বলে জানান চাকরি প্রার্থী হামিদুর রহমান।

“তারপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বললেন, সব সময় যেন দেশসেবায় নিয়োজিত থেকে সৎ পথে চলি। পুলিশের এমন উদ্যোগে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি।”

পুলিশকে তারা চেষ্টা করেও কিছু খাওয়াতে পারেননি বলে জানান।

একই অভিব্যক্তি সদর উপজেলার শুখানপুকুরী ইউনিয়নের সহরাব আলীর মেয়ে সাবিনা ইসলামের।

“ভেবেছিলাম পুলিশ ভেরিফিকেশনে নানা ধরনের হয়রানি করবে। কিন্তু উল্টো পুলিশ সদস্যরা বাড়ি এসে ফুল ও মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এমনটা কখও দেখিনি।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন বিষয়ে মানুষের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। এটা তাদের মন থেকে দূর করার জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

“এ জেলায় ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ২০ জন। সবার বাবা-মায়ের হাতে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদের পক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা ও মিষ্টি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।”

কারও সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক বা বেআইনি কাজে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।