রোববার রাঙামাটিতে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কমিশন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক সাংবাদিকদের একথা বলেন।
কমিশন প্রধান বলেন, এ পর্ষন্ত তিন পার্বত্য জেলা থেকে ভূমি বিরোধ নিয়ে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ৯৬৯টি দরখাস্ত জমা পড়েছে। কমিশনের লোকবলের অভাবে জমা হওয়া দরখাস্তগুলো যাচাই-বাছাই ও সুবিন্যস্ত করা এখনও সম্ভব হয়নি।
“বৈঠকে কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ন, লোকবল নিয়োগ, কমিশনের দাপ্তরিক লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে সরকারের কাছে পুনরায় তাগিদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
কমিশন গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে ভূমি বিরোধ নিয়ে সংক্ষুব্ধদের দরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছিল।
রাঙামাটি সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক।
বৈঠকে কমিশনের নয় সদস্যের মধ্যে আটজন উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমা, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোমিনুর রশিদ আমিন, চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায়, মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, বোমাং সার্কেল চিফ উ চ প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতা চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যা শৈ হ্লা ।
অপর সদস্য খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী যোগ দেননি।
আন্তরিকতার সঙ্গে বৈঠকে এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) সাংবাদিকদের বলেন, ভূমি বিরোধ নিয়ে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত দরখাস্তের উপর বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে।
“লোকবলের অভাবে কমিশনের এসব কাজে তেমন একটা এগুনো যাচ্ছে না। তবে সমর্থ অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”
চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভূমি কমিশন নিয়ে কারোর ভয়ের কোনো কারণ নেই। এ কমিশন জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ নির্বিশেষে কারোর প্রতি বৈষম্য করবে না। আইন ও রীতি-নীতি পদ্ধতি অনুসারে কাজ করা হবে। আইনের বাইরে কোনো কিছুই করা হবে না।
রাঙামাটিতে সড়ক অবরোধ পালিত
সংশোধিত পার্বত্য ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন আইন বাতিল ও ভূমি কমিশনের বৈঠকের প্রতিবাদে পার্বত্য গণপরিষদসহ পাঁচ বাঙালি সংগঠনের ডাকে রোববার রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা সড়কপথ অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে।
অবরোধের কারণে অভ্যন্তরীণ ও দূরাপাল্লার সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
গত ১ অগাস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। ৮ অগাস্ট রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর হয় এবং পরদিন গেজেট প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে সংসদে তা বিল আকারে পাশ হয়।