বাগেরহাটের জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম মো. আসিফ আকরামের আদালতে মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দি দেওয়ার পর পরে আকাশ, হাবিবুল্লাহ, মিজান ও কবীরুলকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয় বলে কচুয়া থানার ওসি কবিরুল ইসলাম জানান।
এর আগে তাদের বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় পুলিশ পৃথক চারটি মামলা করেছে।
কচুয়া থানার ওসি কবিরুল ইসলাম বলেন, অস্ত্র আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও আইসিটি আইনে দায়ের হওয়া তিনটি মামলার বাদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই গাজী ইকবাল হোসেন। পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে দায়ের হওয়া অপর মামলার বাদী কচুয়া থানার এসআই আনসার উদ্দিন।
তাদের গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ও মামলার বাদী গাজী ইকবাল হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অপর চার-পাঁচ সহযোগীসহ রাতের গোপন বৈঠকে অংশ নিয়েছিল। তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা বাগেরহাটে বড় ধরনের নাশকতা ঘটানোর পরিকল্পনা করছিল দাবি করে তিনি বলেন, তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে, যা তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আকাশ মোল্লা ওরফে বাবু (১৯) কচুয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। প্রায় দুই বছর আগে নিজ বাড়িতে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরিত হলে তিনি আহত হয়েছিলেন।
হাবিবুল্লাহ শেখ (১৮) পিরোজপুরের কেয়ামুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবেন। মিজানুর রহমান হাওলাদার (২৬) পিরোজপুরের দুর্গাপুর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল পাশ করেছেন। কবিরুল ফরাজী (২৯) পেশায় আইনজীবী সহকারী বলে তিনি জানান।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই গাজী ইকবাল হোসেন বলেন, তাদের কাছ থেকে উদ্ধার বিস্ফোরকগুলো স্থানীয়ভাবে তৈরি। উচ্চ ক্ষমতার এই বোমাগুলো সকেট বোমা নামেও পরিচিত। এ বছরের প্রথম দিকে তারা বাগেরহাট শহর সংলগ্ন দড়াটানা সেতুর পূর্ব প্রান্তে সেতুর নীচে নদীর পাড়ে এ ধরনের একটি বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর জেলাসহ পাঁচটি জেলা নিয়ে জেএমবির একটি সাংগঠনিক এলাকা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা এই সাংগঠনিক এলাকার আওতাভুক্ত। তারা বাগেরহাটে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল।
ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ছাড়াও কিছু জিহাদি বই এবং জব্দ করা কম্পিউটার থেকে জেএমবির জিহাদি কার্যক্রম বিষয়ক বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।