ঠিকানা পেল মা-বাবা হারা সেই শিশু

রাস্তায় ফেলে যাওয়া চার মাস বয়সী শিশুটি অবশেষে একটি মায়ের কোলে ঠাঁই পেয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিপীযূষ কান্তি আচার্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2016, 05:42 PM
Updated : 23 Oct 2016, 05:43 PM

রোববার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের মেড্ডার তিতাসপাড়ায় সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় থেকে এক নিঃসন্তান দম্পত্তি ‘সম্প্রীতি’ নামের শিশুটিকে দত্তক নিয়ে যায়।

ওই দম্পতি তাদের পরিচয় গোপন রাখার জন্যে অনুরোধ জানিয়েছেন সংবাদকর্মীদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মঈনুর রহমান জানান, গত ১৪ অক্টোবর ভোরে বোরখা পড়া এক নারী ছোট্ট ওই মেয়ে শিশুটিকে পৌর শহরের কাজীপাড়া মহাল্লার মিয়াবাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি খোলা মাঠে ঘাসের উপর ফেলে রেখে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।

ওসি জানান, ফজরের নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লিরা শিশুটিকে দেখতে পান। এসময় স্থানীয় এক নারী শিশুটিকে তুলে তার বাড়ি নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ওই নারীর কাছ থেকে শিশুটিকে থানায় নিয়ে আসে এবং পরে সরকারি শিশু পরিবারে রেখে আসে।

শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক রওশন আরা খাতুন শিশুটির নাম দেন ‘সম্প্রীতি’। শিশু উপযোগী গুঁড়ো দুধ খাওয়াচ্ছিলেন তিনি তাকে।

রওশন আরা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রীতিকে উদ্ধারের পর থেকেই অসংখ্য মানুষ তাকে দত্তক নেওয়ার জন্য বলেন; কিন্তু শিশু পরিবারসহ সদর মডেল থানা পুলিশ সম্প্রীতিকে তার প্রকৃত বাবা-মার কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

বাবা-মার খোঁজ না পেয়ে ‘উপযুক্ত’ এক দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, বলেন তিনি।

শিশুটিকে বিদায় দেওয়ার সময় শিশু পরিবার সংশ্লিষ্টরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। রওশন আরা খাতুন ও কারিগরি প্রশিক্ষক সুলতানা লাইজুসহ অনেকেই তখন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

রওশন আরা বলেন, “এই কদিনে সম্প্রীতির প্রতি আমাদের সবার মায়া পড়ে গেছে। ও চলে যাচ্ছে বলে অনেক খারাপ লাগছে।”

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা মাহমুদ সারোয়ার বলেন, প্রবেশন ও শিশু আইন অনুযায়ী কোনো শিশুর প্রকৃত বাবা-মাকে না খুঁজে না পাওয়া গেলে উপযুক্ত কারো হাতে তাকে তুলে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

“আমরা সেই বিধান অনুযায়ী একটি স্ট্যাম্পে চুক্তি করে এবং প্রকৃত বাবা-মায়ের সন্ধান পেলে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার শর্তে ওই দম্পতির হাতে শিশুটিকে তুলে দিয়েছি।”