প্রশাসনের পরিচয়ে ৪ জনকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

রাজশাহীর বাগমারায় প্রশাসনের লোক পরিচয়ে ‘র‌্যাব ও পুলিশের দুই সোর্সসহ’ চারজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2016, 01:25 PM
Updated : 30 Sept 2016, 01:25 PM

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের ধরে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ব্যাপারে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো তথ্য দিতে পারেনি।

শুক্রবার বিকালে তাদের একজনের পরিবারের পক্ষ থেকে বাগমারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এ চারজন হলেন বাগমারার হামিরকুৎসা গ্রামের নাজমুল আলমের ছেলে শাহ রেজা আলম ইমন (২৮), মুক্তিযোদ্ধা আনিছুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তা (৩৫), সাকয়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে শুকুর আলী (৪৫) ও বালিয়া গ্রামের ছেয়ের আলীর ছেলে আনছার আলী (৩৮)।

এদের মধ্যে আনছার পুলিশের ও মোস্তা র‌্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া ইমন হামিরকুৎসা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও শুকুর আলী মাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য।

আনছার আলীর বড় ভাই শামসুল আলম বলেন, রাত পৌনে ২টার দিকে দুইটি মাইক্রোবাস নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন তাদের বাড়িতে গিয়ে আনছারকে ডেকে তুলে ধরে নিয়ে যায়। এসময় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দেয় যাদের সবাই গেঞ্জি ও জিন্সের প্যান্ট পরা ছিল।

তাদের প্রত্যেকের হাতে একটি করে লাঠি থাকলে কারও কাছে অস্ত্র ছিল না। একজন মুখোস পরা ছিল বলে জানান তিনি।

শামসুল আরও বলেন, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে ওই সময় বাগমারা থানার ওসি সেলিম হোসেনকে ফোন করে বিষয়টি জানান। ওসি গ্রামের লোকজনকে নিয়ে তাদের যে কোনোভাবে আটকানোর পরামর্শ দেন।

এরপর তারা দুজন দুইটি মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের পিছু নেন। শিকদারি বাজারে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়। সেখানে আরও তিনটি মাইক্রোবাস ছিল। সেখানে তারা আমাদের কাছ থেকে মোবাইল ও মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয় এবং তাদেরও গাড়িতে তোলে বলে জানান তিনি।

তবে যাওয়ার সময় তাদের (ওই দুইজন) গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু মোবাইল দুইটি মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলের চাবি তারা ফেরত দেয়নি। পুলিশ আসের আগে তারা তাহেরপুর হয়ে দুর্গাপুরের দিকে চলে যায় বলে তিনি জানান।

ইমনের স্ত্রী সেতু ইয়াসমিন জানান, বাড়ির প্রাচীরের উপর দিয়ে তাদের বাড়িতে ১২ থেকে ১৩ জন ঢুকে পড়ে, যাদের মধ্যে একজন মুখোশ পরা ছিল। তারা ইমনকে ডেকে তুলে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রশাসনের লোক পরিচয় দেয়।

তারা তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান ইয়াসমিন।

মোস্তাকের ভগ্নিপতি নাসির উদ্দিন জানান, ঘরের দরজা ভেঙে ৭/৮ জন ঘরে ডুকে মোস্তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। প্রশাসনের লোক পরিচয় দেওয়া ওই লোকজনের কাছে অস্ত্র বা হাতকড়া না থাকলেও একটি করে লাঠি ছিল।

শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত র‌্যাব, পুলিশ ও পিবিআইসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সকল দপ্তরে খোঁজ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা কেউ ওই এলাকা থেকে কাউকে আটক করেনি বলে জানান।

বাগমারা থানার ওসি সেলিম হোসেন বলেন, কারা তাদের ধরে নিয়ে গেছে, সে ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নেই। এ ব্যাপারে আনছারের ভাই শামসুল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।