বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু

দেশের ছয় জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও আট জন।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2016, 06:36 AM
Updated : 20 Sept 2016, 02:29 PM

মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এ হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, মানিকগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন।

সোমবারও তিনটি জেলায় বজ্রপাতে সাতজনের মৃত্যু হয়।

সুনামগঞ্জে পাঁচ জন

সুনামগঞ্জে মারা গেছেন দুই ব্যবসায়ী ও তিন জেলে।

দিরাই থানার ওসি আব্দুল জলিল বলেন, মঙ্গলবার সকালে করিমপুর ইউনিয়নের মাটিয়াপুর গ্রাম থেকে কয়েকজন লোক নৌকায় করে চাপতির হাওরে যাচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন ওই গ্রামের শামীম মিয়া (৪০) ও তহুর মিয়া (৩৫)। তারা দুইজনই বাঁশ কেনাবেচা করতেন।

লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি জলিল।

শাল্লা থানার ওসি বজলার রহমান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বেরমনা হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন শাল্লা ইউনিয়নের শ্রীহাইল গ্রামের হৃদয় মিয়া (১৮), ইমন মিয়া (২০) ও সাইমুল ইসলাম (১৮)।

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে তিন জন

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় মারা গেছেন বাবা ও দুই ছেলে। আহত হয়েছেন আরও একজন।

মধুপুর বনাঞ্চল এলাকার বেরবাইদ ইউনিয়নের মাগন্তিনগর পচারচনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মধুপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম  জানান, ওই গ্রামের নিখিল ও তার পরিবারের সদস্যরা ভোরবেলা বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই বাবা ও দুই ছেলে মারা যান।

নিহতরা হলেন নিখিল হাজং (৪৫), তার ছেলে জর্জ সিমসাং (১০) ও লোটন সিমসাং (৮)।

এ সময় পরিবারের অপর সদস্য নিখিলের স্ত্রী জনতা সিমসাং আহত হন।

মধুপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক এস কে তুহিন বলেন, জনতা সিমসাংয়ের শরীরের বেশির ভাগ ঝলসে গেছে। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন চিকিৎসকরা।

প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জে ২ জন

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় মারা গেছেন ছেলেসহ মা। আহত হয়েছেন মেয়ে।

করিমগঞ্জ থানার ওসি জাকির রাব্বানী বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গুজাদিয়া ইউনিয়নের করমসী গ্রামের কৃষক মারুফ মিয়ার বাড়িতে বজ্রপাত হয়।

নিহতরা হলেন মারুফ মিয়ার স্ত্রী ললিতা (৪০) ও তাদের ছেলে রিমন (১৫)।

বজ্রপাতে তাদের মেয়ে বিউটি (২০) গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান ওসি জাকির।

সোমবারও কিশোরগঞ্জ জেলায় বজ্রপাতে তিনজন নিহত ও দুইজন আহত হন।

দিনাজপুরে দুই জন

দিনাজপুরের পার্বতীপুর ও খানসামা উপজেলায় মারা যান পিয়ারু মুসাহার (৬০) ও মতি চন্দ্র রায় (৪০)।

পলাশবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোফাখখারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পিয়ারুসহ আরও ছয় জন সরদারপাড়া গ্রামে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই পিয়ারু মুসাহার মারা যান। আহত হন অপর ছয় কৃষক।

পিয়ারুর বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার হাসিনানগর গ্রামে।

আহতদের দুজনের বাড়ি বদরগঞ্জের হাসিনানগরে এবং চার জনের বাড়ি পাবর্তীপুরের সরদারপাড়া গ্রামে। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে চেয়ারম্যান মোফাখখারুল ইসলাম জানান।

সকালে খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগড় গ্রামে জমিতে কীটনাশক ছিটানোর সময় মারা যান কৃষক মতি চন্দ্র রায়। 

আঙ্গারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা জানান, সকালে ছাতিয়ানগড় গ্রামের কৃষক মতি চন্দ্র জমিতে কীটনাশক ছিটানোর সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

মতি চন্দ্র আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ানগড় গ্রামের মেঘনাথ রায়ের ছেলে।

মানিকগঞ্জে এক জন

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নোর রাইল্লা গ্রামে সকালে নিহত হন মঈজ উদ্দিন (৫০)।

সাটুরিয়ার ইউএনও হাসান মূর্তাজা মাসুম জানান, সকাল ৯টার দিকে মঈজ উদ্দিন নিজ বাড়িতে গরুকে খাওয়াচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই জন

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জহুরপুর নয়রশিয়া গ্রামে বিকালে বজ্রপাতে দুই জন নিহত হয়েছেন।

এরা হলেন জহুরপুর নয়রশিয়া গ্রামের আবদুস সামাদের ছেলে ওহেদুল ইসলাম (৪৫) ও ফটিকের ছেলে আব্দুর রাকিব (২৩)।

নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন হোদা স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, পদ্মা নদীর সোনারদির চর এলাকায় মাছ ধরার সময় বেলা ৩টার দিকে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ওহেদুল ও রাকিব মারা যান।