রিশা হত্যা: ওবায়েদকে ধরিয়ে দিলেন মাংস বিক্রেতা

ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার হত্যায় সন্দেহভাজন যুবক ওবায়েদকে ধরিয়ে দিয়েছেন নীলফামারীর এক মাংস বিক্রেতা।

বিজয় চক্রবর্তী কাজল নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2016, 01:33 PM
Updated : 31 August 2016, 01:33 PM

বুধবার ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজার থেকে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে।

প্রথমে র‌্যাব ও পুলিশ দুপক্ষই ওবায়েদকে গ্রেপ্তারের দাবি করলেও পরে দুপক্ষই বলে- ডোমার থানা পুলিশ ও র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

নীলফামারীর সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওবায়েদকে সোনারায় বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখে মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন পুলিশকে খবর দেন।

“পরে ডোমার থানা পুলিশ ও র‌্যাব-১৩ নীলফামারী সিপিসি-২ সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যরা তাকে ডোমার থানায় নিয়ে আসেন।”

ডোমার উপজেলার সোনারায় বাজারে মাংস বিক্রি করেন দুলাল হোসেন (৪৫)। তার বাড়ি হরিণচড়া ইউনিয়নের হরিণচড়া গ্রামে।

দুলাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে বাজারে ওবায়েদকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় আমার। পরে তাকে ডেকে সেখানকার একটি চায়ের দোকানে বসিয়ে পরিচয় জানতে চাই। কিন্তু তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ডোমার থানায় খবর দেই।

“পরে পুলিশ ও র‌্যাব এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়।”

মাংস বিক্রেতা দুলাল হোসেন

এদিকে বেলা ১২টার দিকে ডোমার থানা থেকে মাইক্রোবাসযোগে ওবায়েদকে নিয়ে ডিএমপি রমনা জোনের এডিসি এইচ এম আজিমুল হকের নেতৃত্বে ডিএমপির একটি দল ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

ঢাকায় রওনা দেওয়ার আগে ডোমার থানায় র‌্যাব-পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ প্রেস ব্রিফিং করা হয়।

ব্রিফিংয়ে নীলফামারীর পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান, র‌্যাব-১৩ এর সিইও মো. আতিক, ঢাকা মহানগর পুলিশ রমনা জোনের এডিসি এইচ এম আজিমুল হক, সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির এবং ডোমার থানার ওসি রাজিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি জাকির হোসেন খান বলেন, গোপন সংবাদ পেয়ে সোমবার রাত থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডোমার থানা পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা তাকে ধরতে সোনারায় বাজারসহ এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। কিন্তু রাতে তাকে ধরা সম্ভব হয়নি।

“যেহেতু রিশা হত্যা মামলা ঢাকার রমনা থানায় করা হয়েছে, তাই রমনা থানা পুলিশের কাছে ওবায়েদকে হস্তান্তর করা হয়েছে।”

সুরাইয়া আক্তার রিশা

র‌্যাব-১৩ এর সিইও মো. আতিক বলেন, আসামিকে ধরতে র‌্যাব-পুলিশের যৌথ টিম ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

রমনা জোনের এডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, ওবায়েদকে ধরতে আমি নিজে এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোশারফ হোসেনসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রমনা জোনের একটি টিম স্থানীয় পুলিশ ও র‌্যাবের সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছি।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ারের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রিশা (১৪) গত বুধবার স্কুলের সামনের ফুটওভারব্রিজে এক যুবকের ছুরিকাঘাতে আহত হয়। তিনদিন পর রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় রিশার মা তানিয়া বেগম রমনা থানায় একটি মামলা করেন, যাতে এলিফ‌্যান্ট রোডের বিপণি বিতান ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সের কর্মী ওবায়েদকে আসামি করা হয়।

তানিয়া বেগম পুলিশকে বলেছেন, কয়েক মাস আগে বৈশাখী টেইলার্সে একটি জামা বানাতে দিয়ে যোগাযোগের জন্য সেখানে তিনি নিজের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। সেই থেকে ওবায়েদ ওই নম্বরে ফোন করে প্রায়ই রিশাকে বিরক্ত করে আসছিলেন।

ওবায়েদই সেদিন রিশাকে ছুরি মেরেছিল বলে তানিয়া বেগমের ধারণা।

ওবায়েদের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বীরগঞ্জে।