নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মঈনুল হক রোববার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, “বাড়ির মালিক নুরুউদ্দিন দেওয়ানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। তাকে তথ্য গোপনের অভিযোগে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।”
জঙ্গিদের অবস্থানের খবর পেয়ে শনিবার ভোরে পাইকপাড়ার কবরস্থান এলাকার নরুউদ্দিন দেওয়ানের তিনতলা বাড়ি ঘিরে ফেলে অভিযান শুরু করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। পরে র্যাবসহ অন্য বাহিনীগুলোও অভিযানে যোগ দেয়।
এক ঘণ্টার অভিযান শেষে ওই আস্তানায় পুলিশের গুলিতে ‘নব্য জেএমবি’র প্রধান গুলশান হামলার ‘হোতা’ তামিম আহমেদ চৌধুরীসহ তিনজন নিহত হন।
অভিযান শেষে বাড়ির মালিক নুরুউদ্দিন দেওয়ান এবং তার স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ ১০ জনকে আটক করে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন জানান, আটক ওই দশজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নুরুউদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাকি নয়জনকে রোববার তারা ছেড়ে দিয়েছেন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, তামিমরা গত ২ জুলাই ওই বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন বলে ভবন মালিক নুরুউদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা জানতে পেরেছেন।
“বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় তারা বলেছিল, তারা আগে একমি ল্যাবরেটরিজে কাজ করত। এখন ওষুধের ব্যবসা করছে- এই পরিচয় দিয়ে তারা দুজন বাড়ি ভাড়া নেয়। তবে সেখানে যে তিনজন থাকত, তা বাড়ির মালিক জানতেন।”
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় ‘নিরাপদ মনে করে’ ওই এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে আস্তানা গড়ে তোলেন জঙ্গি নেতা তামিম। বিদেশিদের ওপর হামলার ‘পরিকল্পনা ছিল’ তাদের।
পুলিশ ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ‘ব্লক রেইড’ চালাচ্ছে এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে মঈনুল হক জানান।
শিবিরকর্মী গ্রেপ্তার
পাইকপাড়ার ওই বাড়ির পাশের একটি ভবনে পুলিশের তল্লাশির সময় ইব্রাহীম খলিল নামের এক শিবিরকর্মীকে উগ্র মতবাদের বইসহ গ্রেপ্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
তিনি বলেন, “গত রাতে ব্লক রেইডের সময় একটি বাড়ি থেকে ইব্রাহীম খলিলকে গ্রেপ্তর করা হয়। সে শিবির করে। তার সঙ্গে থাকা আরও তিন শিবিরকর্মী পালিয়ে যায়।”
তামিমের জঙ্গি দলের সঙ্গে এই শিবির কর্মীদের কোনো যোগসূত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।