কেরানীগঞ্জে গলা কেটে হত্যা: নারীসহ গ্রেপ্তার ৪

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তিন নারীসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

দোহার-নবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2016, 02:26 PM
Updated : 26 August 2016, 02:26 PM

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা থেকে বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং বৃহস্পতিবার তাদের কেরানীগঞ্জ আনা হয়।

শুক্রবার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. মনিরুল ইসলাম একথা জানান।  

গ্রেপ্তাররা হলেন- মানিকগঞ্জের চররঙ্গগুরি গ্রামের মো. চান মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম অরণ্য (২৫), তার স্ত্রী মেহজাবীন ইসলাম মুন (১৮), রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুর মাদ্রাসা রোডের মো. মাসুদ রানার স্ত্রী ও অরণ্যের শাশুড়ি মৌসুমী ইসলাম জোৎস্না (৪০) ও একই এলাকার লতিফ মোল্লার স্ত্রী অরণ্যের খালা শাশুড়ি শিউলী (২৮)।

গত শনিবার সকালে পুলিশ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বাবু রায়পাড়া-মুজাহিদনগর সড়ক থেকে বরিশালের মুলাদীর গলইভাঙ্গা এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আমিনুল ইসলামের (৪৪) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।

তিনি রাজধানীর কদমতলীর মুরাদপুরের মাদ্রাসা রোড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে এক আইনজীবীর ফার্মে প্রধান হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন।

এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের বড় ভাই মো. রেজানুর ইসলাম অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান।

নারীঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে গ্রেপ্তাররা পুলিশকে জানিয়েছে, বলেন মনিরুল।

তাদের দেওয়া হত্যার বিবরণ অনুযায়ী মনিরুল বলেন, আগে করা পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার রাত ৯টার পর তারা কৌশলে আমিনুলকে সিএনজি যোগে কেরানীগঞ্জের পোস্তগালা সেতু হয়ে বাবু রায়পাড়া মোজাহিদনগর পাকা রাস্তায় নিয়ে আসে।

“সেখানে আগে থেকে চাকু ও চাপাতি নিয়ে অবস্থান করা অরণ্য প্রথমে আমিনুলকে পেছন থেকে ঘাড়ের পেছনে চাকু দিয়ে আঘাত করে ও পরে গলা কেটে হত্যা করে।”

তাদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো জায়গা থেকে মোটরসাইকেল, হত্যায় ব্যবহৃত  রক্তমাখা চাপাতি এবং হত্যার সময় অরণ্যের পরিহিত রক্তমাখা শার্ট উদ্ধার করা হয় বলে মনিরুল জানান।

পুলিশের প্রেস ব্রিফিং শেষে শুক্রবার দুপুরে নিহত আমিনুলের স্ত্রী ও বরিশালের স্কুল শিক্ষিকা হুমায়রা জাহান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তাররা তার স্বামী সম্পর্কে নারীঘটিত ঘটনা বানিয়ে বলেছে। তার স্বামীর এমন কোনো সম্পর্ক ছিল না।

এ হত্যার পিছনে অন্য কেউ আছে, যে এই চারজনকে ব্যবহার করেছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

নিহতের ভায়রা মামুন সাংবাদিকদের বলেন, “যেদিন ভাইয়ের লাশ পুলিশ উদ্ধার করেছে সেদিনই ভাইয়ের পাশের রুমমেট দালাল কুদরত আলীকে আমাদের সন্দেহ বলে জানিয়েছিলাম।

“কারণ বিদেশ যাওয়ার জন্য আমার ভাই নিজেরটিসহ কয়েকজনের পাসপোর্ট ও তিনলাখ টাকা তার কাছে দিয়েছিলেন দীর্ঘদিন আগে। সে দীর্ঘদিন যাবৎ এটা নিয়ে হয়রানি করছিল।”