ভবদহ সংকটে বন্ধ ৩০২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

যশোরের অভয়নগর, কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলায় কমপক্ষে ৩০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধ হওয়ায় বন্ধ রয়েছে।

শিকদার খালিদ যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2016, 04:34 AM
Updated : 26 August 2016, 07:15 AM

ভবদহ স্লুইস গেইট পলি জমে বন্ধ থাকায় মুক্তেশ্বরী ও হরি নদীর পানি উপচে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের মনিরামপুর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাওকত হোসেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অতিবর্ষণের কারণে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পলির কারণে স্লুইস গেইট বন্ধ থাকায় প্রায় এক মাস ধরে তিন উপজেলার বিপুল এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে।

তিনটি উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমোতাবেক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলে কমপক্ষে ৩০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ রয়েছে।

বন্ধ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে:

অভয়নগর উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১টি কলেজ;

মনিরামপুরে ৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭টি কলেজ ও ৬টি মাদ্রাসা;

কেশবপুরে ৭৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩০টি মাদ্রাসা ও ৮টি কলেজ।

এসব প্রতিষ্ঠানের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান।

অভয়নগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবীর বলেন, উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি থাকায় ১৫০০ শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

একই উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম বলেন, ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫ হাজার ও ১টি কলেজে ২০০ শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

মনিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার সরদার বলেন, উপজেলার ৫১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জলাবদ্ধতার কারণে ৫ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

একই উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, উপজেলায় ৩৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থী, ৭টি কলেজে ১৫০০ ও  ৬টি মাদ্রাসায় ১২০০ শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

কেশবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিরাজুল আরেফিন বলেন, উপজেলায় ৭৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

একই উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, উপজেলার ৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫ হাজার শিক্ষার্থী, ৩০টি মাদ্রাসায় ৫ হাজার ও ৮টি কলেজে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী বলেন, তিন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মডেল টেস্ট স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে সমাপনী পরীক্ষায় সমস্যায় না পড়ে সেজন্য অতিরিক্ত পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে।

ক্ষতির তালিকা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

সমস্যা সমাধান বিষয়ে জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীর বলেন, ইতোমধ্যেই যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পলি অপসারণ করে স্লুইস গেইট খোলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।