‘জঙ্গি আস্তানার’ হাসান বাড়ি ছাড়েন এক বছর আগে

ঢাকার কল্যাণপুরে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানের সময় আহত অবস্থায় পুলিশের হাতে আটক মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিগেন ঠিক এক বছর আগে কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিরুদ্দেশ হন। 

বগুড়া প্রতিনিধিজিয়া শাহিনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 July 2016, 09:07 AM
Updated : 26 July 2016, 03:34 PM

১৮ বছর বয়সী এই তরুণ বগুড়ার জামিল নগরের রেজাউল করিমের ছেলে। গতবছর বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর তিনি বগুড়ার জলেশ্বরী এলাকায় ইসলামী ছাত্রশিবির পরিচালিত রেটিনা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন বলে পরিবারের ভাষ্য।

আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ হাসান পুলিশকে বলেছেন, কল্যাণপুরের ওই বাসায় তিনি বাবুর্চির কাজ করতেন। তার ‘সিরিয়া যাওয়ার’ পরিকল্পনা ছিল এবং বেশ কিছুদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই।

হাসানের বাবা রেজাউল করিম এক বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর মা মোসাম্মৎ রোকেয়া আক্তার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবিকার কাজ করেন।

ছেলের বিষয়ে খোঁজখবর করতে হাসানের মাকে বগুড়া সদর থানার নিয়ে কয়েকঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে এস আই জুলহাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

থানায় যাওয়ার আগে রোকেয়া আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এইচ এস সি পাস করার পর মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার জন্য রেটিনা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন হাসান। গত বছর ২৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৭টায় কোচিংয়ের যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। তার মোবাইল ফোনও তখন থেকে বন্ধ।

ছেলে নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে পরদিন বগুড়া সদর থানায় জিডি করেন হাসানের মা রোকেয়া। জিডিতে তিনি হাসানের বয়স ১৮ বছর বলে উল্লেখ করেন।

ছেলের খোঁজ চেয়ে পরে বগুড়ার তখনকার সহকারী পুলিশ সুপার গাজীউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান রোকেয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেহেতু সেটা আমার সার্কেল না, আমি তাকে (রোকেয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডলের কাছে যেতে বলি।”

পরে এ বিষয়ে আরিফুর রহমানের সঙ্গেও একাধিকবার যোগাযোগ করার কথা বলেছেন রোকেয়া।

আনোয়ার নামের এক প্রতিবেশী জানান, হাসান এলাকায় রিগেন নামেই বেশি পরিচিত।

“সে নিয়মিত নামাজ রোজা করত। তবে এলাকায় কারও সাথে খুব একটা মিশত না।”

বগুড়ার পুলিশ সে সময় হাসানের খোঁজ দিতে না পারলেও ঠিক এক বছর পর তার সন্ধান পাওয়া যায় কল্যাণপুরে।

জঙ্গি দমন অভিযানের অংশ হিসেবে পুলিশ ও র‌্যাব সোমবার রাতে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর সড়কের গার্লস হাই স্কুলের পাশে তাজ মঞ্জিল নামের ছয় তলা একটি ভবনের পাঁচতলায় তলায় তল্লাশি করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে। ওই সময় গোলাগুলির মধ্যে গ্রেপ্তার হন হাসান।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসানকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেলে; সেখানে রেজিস্ট্রার খাতা থেকে তার ঠিকানা জানতে পেরে বগুড়ায় যোগাযোগ করেন সাংবাদিকরা।

এদিকে ভোরে ওই ভবনে সোয়াটের অভিযানে নিহত হন সন্দেহভাজন নয় জঙ্গি যাদের সবার পরনে কালো পাঞ্জাবি ছিল বলে পুলিশের ভাষ্য।