বৃহস্পতিবার সকালে চালানো ওই বোমা হামলায় নিহত হন নেত্রকোণার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের আনসারুল হক (৪০)। ওই ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, এক নারীসহ চার জন নিহত হন।
মৃত্যুর খবর শোনার পর তার বাড়ির পরিবেশ স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে। সান্ত্বনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন প্রতিবশীরা।
বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন আনসারুলের স্ত্রী রুনা আক্তার ও বৃদ্ধা মা রাবেয়া বেগম।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আনসারুলের সঙ্গে ফোনে শেষ কথা হয় বলে জানান অনসারুলের বড় ভাই নাজমুল হক।
নাজমুল বলেন, “ওই সময় সে বলছিল- রুনা, মাসহ সবাইকে নিয়ে তোমরা ভালমতো ঈদ কর। আমার জরুরি ডিউটি আছে; ছুটি নেই। আসতে পারব না “
নাজমুল হক এই কথা বলে ডুকরে কেঁদে ওঠেন। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার ভাই আর বাড়িতে কোনদিনই আসবে না। আর কথা বলবে না। জঙ্গিরা সব কেড়ে নিল। রুনাকে, মাকে কী বুঝাবো?”
নাজমুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে আনসারুলের সহকর্মীরা মোবাইল ফোনে তার আহত হওয়ার খবর দেন। পরে তারাই আবার ফোন করে মারা যাওয়ার খবরও দেন।
মৃত সিদ্দিকুর রহমান মুন্সীর পাঁচ ছেলে এক মেয়ের মধ্যে তৃতীয় আনসারুল হক। পাঁচ বছর আগে আনসারুলদের সবার বড়ভাই আতিকুর রহমান সিলেটে ভবন নির্মাণের কাজ করতে গিয়ে মারা যান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সোহেল মিয়া বলেন, পরিবারটি তেমন স্বচ্ছল নয়। বড়ভাই মারা যাওয়ার পর আনসারুলের আয়ের উপর অনেকটা নির্ভর ছিল সংসারটি।
আনসারুল এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
প্রতিবেশী কাঠ ব্যবসায়ী মৌলা মিয়া বলেন, আনসারুল প্রায় আট বছর আগে কেন্দুয়া উপজেলার পাছহাট গ্রামের সবুজ মিয়ার মেয়ে রুনা আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের কোনো সন্তান নেই।
“আনসারুলের মৃত্যু সংবাদ বাড়িতে পৌঁছার পর থেকে বার বার স্ত্রী রুনা আক্তার ও বৃদ্ধা মা রাবেয়া বেগম মূর্ছা যাচ্ছেন। আত্মীয়-স্বজন, গ্রামের ও আশপাশ গ্রামের মানুষ আসছেন; তাদের সহমর্মিতা জানাচ্ছেন।”
অনেকেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।