মিতুর শ্বশুরবাড়িতে চলছে বিলাপ

চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যার ঘটনায় মাগুরা শহরে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2016, 10:21 AM
Updated : 6 June 2016, 07:01 AM

এসপি হিসেবে ঢাকায় বদলি হওয়ার আগে চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী বিভিন্ন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া বাবুলের স্ত্রীকে চট্টগ্রামে তাদের বাসার কাছে রোববার সকালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে মোটরসাইকেলে আসা তিন ব্যক্তি।

দুপুরে মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় মিতুর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে দেখা যায়, বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ ও মা শাহিদা বেগম বিলাপ করতে করতে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। সমবেদনা জানাতে এসেছেন প্রতিবেশী ও পুলিশ কর্মকর্তারা।

অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ওয়াদুদ পুত্রবধূর নানা স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, “মিতু পুত্রবধূ হলেও সে ছিল আমার মেয়ে। সে আমাকে বাবার মতো ইজ্জত করত। তার বাসায় গেলে আসতে দিতে চাইত না।”

গত মাসে সর্বশেষ চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন তিনি; মিতুর জোরাজুরিতে সপ্তাহখানেক ছিলেন। এবার তাদের সবার একসঙ্গে ঈদ করার কথা ছিল।

ছেলের সততার কথা তুল ধরে তিনি বলেন, “বাবুল নির্লোভ মানুষ। আল্লাহ কেন তাকে এমন শাস্তি দিলে। এখন তার দুইটা বাচ্চা এতিম হয়ে গেল। ছোট বাচ্চা দুইটা মা ছাড়া কীভাবে থাকবে।”

পুত্রবধূর শোকে অঝোরে কাঁদছেন এসপি বাবুলের মা শাহিদা।

মিতুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “গতকালই মিতু সবার জন্য কাপড়, চিনি, সেমাই, তেল পাঠিয়েছে। ঈদের আগে বাড়ি আসার কথা ছিল। সবাই তার অপেক্ষায় ছিল।

“পরিবারের সব সদস্যকে সে আপন করে নিয়েছিল। শুধু পরিবার নয়, সাধারণ মানুষকেও ভালবাসত।”

এর আগে হত্যাকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবেশী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সমবেদনা জানাতে কাউন্সিল পাড়ায় বাবুলের বাড়িতে ভিড় করেন।

মাগুরার পুলিশ সুপার এ কে এম এহসান উল্লাহ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম সস্ত্রীক এসে বাবুলের মা-বাবার প্রতি সমবেদনা জানান।

বাবুলের ভাই আইনজীবী হাবিবুর রহমান লাবলু জানান, মিতু ঢাকার হোম ইকোনোমিক্স কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করলেও গৃহিনী ছিলেন। বাবুলের চাকরির সুবাদে দুই সন্তানসহ তারা চট্টগ্রামেই থাকতেন।

মিতু অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মোশারফ হোসেনের মেয়ে। তার বাবা এখন থাকেন ঢাকার বনশ্রী এলাকায়।

আর বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম শৈলকুপা উপজেলার ফাদিলপুর।

প্রায় ২০ বছর আগে আব্দুল ওয়াদুদ মাগুরা শহরের কাউন্সিল পাড়ায় বাড়ি করেন; অবসরের পর থেকে সেখানেই থাকছেন।