টেকনাফে আনসার ব্যারাকে হামলায় ছিল ‘পাকিস্তানিও’

কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আনসার ব্যারাকে হামলায় এক পাকিস্তানির নেতৃত্বে থাকার তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2016, 02:49 PM
Updated : 30 June 2016, 07:39 AM

গত ১৩ মে’র এই ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি নুরুল আবছারের আদালতে দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে একথা জানান পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম।

এই আসামি পাকিস্তানির পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠন ‘রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও)’ জড়িত থাকার তথ্যও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার বিচারিক হাকিম সিরাজ উদ্দিনের আদালতে আবছার (২২) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টেকনাফ থানার পরিদর্শক কবির হোসেন জানান।

আবছার টেকনাফের হ্নীলার রঙ্গীখালী এলাকার ছাবের আহমদের ছেলে। তাকে গ্রেপ্তারের খবর সোমবার পুলিশ জানলেও কোথা থেকে ধরা হয়েছে, তা জানাননি কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ।

আনসার ব্যারাক কমান্ডারকে হত্যা ও অস্ত্র লুটের ঘটনার পর পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন

গত ১৩ মে গভীর রাতে হ্নীলার মোচনী এলাকার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আনসার ব্যারাকে মুখোশ পরিহিত ৩০/৩৫ জন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত হামলা চালায়।

এ ঘটনায় আনাসার ব্যারাকের কমান্ডার মো. আলী হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। হামলাকারীরা ব্যারাকের অস্ত্রাগার থেকে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬৭০ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় আনসার ব্যারাকের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ জনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় পুলিশ সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও আসামি দেখানো হচ্ছে আদালতে জবানবন্দি দেওয়া আবছারকে।

ডিআইজি শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আসামি নুরুল আবছার আদালতে আনসার ব্যারাকে হামলার পুরো ঘটনা তুলে ধরেছেন। হামলায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক, পাকিস্তানের এক নাগরিক ও কয়েকজন বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করে বলে আদালতকে জানিয়েছেন তিনি।”

আবছারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “পাকিস্তানি নাগরিক ওমর ফারুক ওরফে আরএসও ফারুকের নেতৃত্বে আনসার ব্যারাকে এ হামলা হয়েছে। রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) এর পরিকল্পনায় এ হামলা চালানো হয়।

সেই আনসার ব্যারাক

“এতে চট্টগ্রাম থেকে আসা আরএসওর কয়েকজন সদস্য, হামলার দিন রাতে নৌকা যোগে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা, স্থানীয় শরণার্থী শিবিরের কয়েকজন রোহিঙ্গা এবং কয়েকজন বাংলাদেশির সমন্বয়ে এ হামলার পরিকল্পনা করা হয়।”

ডিআইজি বলেন, নুরুল আবছারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আনসার ব্যারাকে হামলা ঘটনার রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে।

“মূলত অস্ত্র লুটের জন্য এ হামলা চালানো হয়। হামলার দিন রাতেই লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি নিয়ে মিয়ানমার পালিয়ে যায় জড়িতদের অধিকাংশই।”

আবছারও ঘটনার পর মিয়ানমারে পালিয়ে গিয়ে আবার বাংলাদেশে ঢুকে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন বলে শফিকুল জানান।

আনসার ব্যারাকে হামলার ঘটনায় লুট হওয়া অস্ত্র ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।