ধর্ম নিয়ে লেখায় ‘লাইক দেওয়ায়’ উত্তেজনা, শিক্ষক বরখাস্ত

নারায়ণগঞ্জের ঘটনার রেশ না কাটতেই বগুড়ার শেরপুরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে স্থানীয় একদলের দাবির মুখে এক হিন্দু শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2016, 04:54 PM
Updated : 30 May 2016, 05:07 PM

গণিতের শিক্ষক বিপ্লব কুমার রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তিনি ধর্ম নিয়ে ফেইসবুকে একটি ‘আপত্তিকর লেখায় লাইক দিয়েছেন‘।

উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলে সোমবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিল স্থানীয়রা।

এরপর  বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুদেব পাল জানান।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ের হিন্দু প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে বগুড়ার ঘটনাটি ঘটল।

নারায়ণগঞ্জের ঘটনা তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ বরখাস্ত করলেও তাকে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।

বগুড়ার সুঘাট ইউনিয়নের বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেইসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে একটি লেখায় ‘কৃষ্ণ কুমার’ নামে একটি আইডি থেকে লাইক দেওয়া হয়।

‘কৃষ্ণ কুমার’ আইডিটি বিপ্লব কুমারেরই বলে ধারণা স্থানীয়দের।  এরপর রোববার বিকালে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা চলতে থাকে। সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে তারা বিপ্লবকে বরখাস্তের দাবি জানায়।

.

তবে ওই আইডিটি বিপ্লব কুমারের কি না, তা জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সোমবার তিনি বিদ্যালয়েও অনুপস্থিত ছিলেন বলে প্রধান শিক্ষক সুদেব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান। 

এদিকে বিদ্যালয়ে উত্তেজনার খবর পেয়ে পর সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশ সেখানে যায়।

প্রধান শিক্ষক সুদেব বলেন, শিক্ষক বিপ্লব কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে তা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইসরাইল হোসেন বাদল বিশ্বাসকে জানান।

উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ জরুরি বৈঠকে বসে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করে বলে প্রধান শিক্ষক জানান। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম সারোয়ার জাহান বলেন, “কৃষ্ণ কুমার আইডিটি বিপ্লব কুমারের কি না, সেটা তদন্তসহ সার্বিক বিষয় তদন্তে আইটি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়রা ওই লেখা ও আইডির একটি ‘অনুলিপি’ দেখিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তদন্তের পরই এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে।”