এদিকে আগের কয়েকটির মতো এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর বার্তা এসেছে বলে সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ জানিয়েছে।
তারা বলছে, ব্যবসায়ী দেবেশকে হত্যার ঘটনায় আইএস নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা ‘আমাক’ এর মাধ্যমে দায় স্বীকারের বার্তাটি এসেছে।
তবে সাদাসিদা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী দেবেশকে কেন জবাই করে হত্যা করা হল, সে প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না এলাকাবাসী।
বুধবার সকাল ৬টায় মহিমাগঞ্জ বাজারের দোকানে জুতা ব্যবসায়ী দেবেশকে জবাই করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ অবস্থায় পুলিশের তদন্তের অপেক্ষায় সকাল ১০টা পর্যন্ত লাশ ওই দোকানেই পড়ে থাকে।
পরে গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
হত্যার ঘটনায় নৃপেন চন্দ্র নামে একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আটক করে পুলিশ। এরপর নিহতের স্ত্রী আনন্দ রাণী বাদী হয়ে রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সন্দেহজনকভাবে আটক নৃপেনকে আসামি করা হয়নি, অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আটক নৃপেনের সঙ্গে এখনও এই খুনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। মূলত সে একজন ছিঁচকে চোর এবং মাদকাসক্ত। তবে আদালতে তার রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে।”
নিহতের স্ত্রী আনন্দ রাণীর ভাষ্য, নৃপেন টাকা-পয়সা লেনদেন নিয়ে একবার দেবেশের সঙ্গে গোলমাল বাঁধিয়েছিল। এ কারণে শত্রুতাবশত নৃপেন খুন করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে তাদের পরিবারের সদস্যের ধারণা হয়।
তবে সেই ধারণা থেকে সরে এসে নৃপেন খুনে জড়িত নয় বলেই এখন মনে করছেন দেবেশের পরিবারের সদস্যরা।
ডান পায়ের পাতা না থাকায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলাফেরা করতেন দেবেশ। তার সঙ্গে কারও কোনো ধরনের বিরোধের খবর স্থানীয়রা দিতে পারেননি। আইএসই বা কেন তাকে হত্যা করবে, তাও বুঝতে পারছেন না তারা।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুনিরা পেশাদার, তারা দেবেশকে শুইয়ে দিয়ে এক কোপে হত্যা করেছে।”
গত ফেব্রুয়ারিতে গোবিন্দগঞ্জ পৌর বাজারের ব্যবসায়ী তরুণ দত্তকে যেভাবে ধারাল চাপাতি দিয়ে জবাই করা হয়েছিল, দেবেশকে খুনের সঙ্গে তার মিল রয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে হত্যাকাণ্ডস্থল দেবেশের সেই জুতার দোকান পরিদর্শন করেছেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ ও জেলার পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম।
তারা নিহত দেবেশ চন্দ্রের পরিবারকে নিরাপত্তার সঙ্গে জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এ সময় পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “এই খুনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।”
খুব শিগগির এ খুনের রহস্য উদঘাটনসহ খুনিদের গ্রেপ্তার করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।