আওয়ামী লীগেরই জোট শরিক দলটির প্রার্থী সুলতান মাহমুদ অভিযোগ করছেন, পুলিশ ও প্রশাসন একচেটিয়াভাবে কাজ করে যাচ্ছে নৌকা প্রতীকের আবু সাঈদ খানের পক্ষে।
মশাল প্রতীকের প্রার্থী সুলতান মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আবু সাঈদ ও তার সমর্থকরা গত বৃহস্পতিবারও পুলিশের সামনেই তার কর্মীদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়।আহত কর্মীদের চিকিৎসার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেও একধাপ মারধর করা হয়।
এই ঘটনায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও তার অভিযোগ।
সাঈদ খান ওই ইউনিয়নের টানা তিন বারের চেয়ারম্যান। তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে গত ১৮ মার্চ জাসদ প্রার্থী ও তার অনুসারীদের অন্তত ২০টি বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে।
সুলতান বলেন, ১৮ মার্চের ঘটনায় মামলা হলেও আবু সাঈদ ও তার সমর্থকদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না।
বর্তমানে ভাড়ারা ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ড সাঈদ সমর্থকরা অবরুদ্ধ করে রেখেছে দাবি করে জাসদের প্রার্থী বলেন, “সেখানে আমাদের কোনো প্রচারণা নেই। ওই তিন ওয়ার্ডের চারটি কেন্দ্রে ১২ হাজারের মতো ভোটার আছে। এভাবে চলতে থাকলে সেখানে ভোটও সুষ্ঠু হবে না।”
তবে পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল হাসান দাবি করেছেন, নির্বাচনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাড়ারা ইউনিয়নের পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক। ১৮ মার্চের ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার আছে। বাকিদের খোঁজা হচ্ছে।”
আবু সাঈদ গত ১৯ মে তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি থানায় জমা দিয়ে গেছে বলেও জানান ওসি।
যেদিন আবু সাঈদ অস্ত্র জমা দিয়েছেন বলে ওসি জানান, সেদিনই তার সমর্থকরা মশাল সমর্থকদের উপর গুলি চালায় বলে সুলতানের অভিযোগ।
আবু সাঈদকে কেন গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না-জানতে চাইলে ওসি বলেন, “দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধেই মামলা আছে।”
মামলার প্রসঙ্গে সুলতান বলেন, পাশের গ্রামে ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুদিন আগে একটা মামলা হয়েছে, তাতে আসামির তালিকায় তার নাম দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি করেন জাসদ প্রার্থী সুলতান।
“পাবনায় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। কোনো পদক্ষেপ নেই। ঢাকায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছেও লিখিত জানিয়ে এসেছি।”
জাসদ প্রার্থীর এসব অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু সাঈদের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বরাবরই বলে আসছেন, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে। পরাজয় আঁচ করে ভোটকে বিতর্কিত করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নানা অভিযোগ করছে।
ভাড়ারাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য আবু সাঈদ এক সময় চরমপন্থি সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ১৯৯৭ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় বিএনপি আমলে ‘অপারেশন ক্লিন হার্টের’ সময় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়ে কিছু দিন কারাগারেও ছিলেন তিনি।
পদ্মা নদীর পাড়ে দুর্গম চরাঞ্চল ভাড়ারা এলাকায় বালুমহাল নিয়ন্ত্রণে রেখে অবৈধভাবে বালু বিক্রির অভিযোগও রয়েছে আবু সাঈদের বিরুদ্ধে।