পরশুরামে ইউএনওকে মারধর, মামলা দায়ের

ফেনীর পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রকাশ্যে কিল-ঘুষি মেরে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

নাজমুল হক শামীম ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2016, 11:25 AM
Updated : 6 May 2016, 03:58 PM

এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ শ্রমিক লীগ নেতা এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ তিনজনকে আটক করেছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার তপন ও তার অনুসারীরা শুক্রবার দুপুরে উপজেলার ধনিকুণ্ড এলাকায় ইউএনও এইচএম রকিব হায়দারকে মারধর করে বলে জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান জানান।

রকিবকে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে সেখান থেকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. হাবিবুল করিম জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসক আমিন বলেন, সকালে বিলোনীয়া স্থলবন্দর পরিদর্শন ও একটি সমাবেশে অংশ নিতে পরশুরাম যাচ্ছিলেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। এ সময় মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে ইউএনও রকিব হায়দার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা ফেনী-পরশুরাম সড়কের ধনিকুণ্ড এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন।

মন্ত্রী ঘটনাস্থলে আসার কিছুক্ষণ আগে ওখানে স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেন উদ্বোধন উপলক্ষে মন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে আওয়ামী লীগ নেতা তপনসহ নেতা-কর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

“ইউএনও ওই স্কুলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তপনকে সম্মান না করার অভিযোগ তুলে তিনি ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তপন ও তার অনুসারীরা ইউএনওকে প্রকাশ্যে কিল-ঘুষি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন,” বলেন জেলা প্রশাসক।

খবর পেয়ে প্রশানের কর্মকর্তারা ইউএনওকে উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

তবে ইউএনওকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা খাইরুল বাশার মজুমদার তপন বলেন, ইউএনও আহত হওয়ার খবর পেয়ে তিনি তার শারীরিক খোঁজ-খবর নিতে হাসপাতালে গেছেন।

কে বা কারা হামলা করেছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।

পুলিশ সুপার রেজাউল হক বলেন, এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি দেখিয়ে মামলা করেছেন ইউএনর গাড়িচালক আবুল কাশেম।

“এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিকালে গোয়ান্দা পুলিশ এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ তিনজনকে আটক করেছে।”

আটককৃতরা হলেন পরশুরাম পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, পারভেজ ও গম ব্যবসায়ী রাশেদুল হাসান রাশু।

তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আসামিদের নাম প্রকাশ করছে না।

এদিকে ইউএনওর উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খান।

শুক্রবার বিকালে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউএনও রকিব হায়দারকে দেখতে গিয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রটোকলে কর্মরত অবস্থায় যারা ইউএনওর উপর হামলা চালিয়েছে তারা দলীয় নেতা-কর্মী হলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।