কাশিমপুরে নিজামীর সঙ্গে স্ত্রী ছেলে-মেয়ের সাক্ষাৎ

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে ফাঁসির আসামি যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে দেখা করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।  

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2016, 06:27 AM
Updated : 6 May 2016, 07:38 AM

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, নিজামীর স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ ছয়জন শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে কারাগারে পৌঁছান।

“বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজামীর স্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার নিজামী, ছেলে নজিব মোমেন ও নাইমুর রহমান, মেয়ে খাদিজা মোহসীনা ও পুত্রবধূ সালেহা ও রাইয়ানকে কারাগারে ঢুকতে দেওয়া হয়।”

কারাগারের একটি কক্ষে নিজামীর সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের ৪০ মিনিট কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয় বলে কারাগারের জেলার মো. নাশির আহমেদ জানান।  

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলে এই যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকরের আগে শেষ বিচারিক প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়।

বিগত চার দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী নিজামী আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর কনডেম সেলে। সেখানে বসেই বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি রেডিওতে রিভিউ খারিজের খবর পান বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়।

নিয়ম অনুযায়ী একাত্তরের বদরপ্রধান নিজামী এখন কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। তিনি তা না চাইলে বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না পেলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করবে।

সেক্ষেত্রে দণ্ড কার্যকরের আগে আরও একবার নিজামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে তার পরিবারের সদস্যদের। 

নিজামীর আইনজীবী এস এম শাজাহান বৃহস্পতিবার রায়ের পর জানান, জামায়াতি আমির প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না- সে সিদ্ধান্ত তিনি বা তার পরিবারের পক্ষ থেকেই নেওয়া হবে।   

জেলার নাশির আহমেদ জানান, রিভিউ খারিজের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পেলে কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে নিজামীর সিদ্ধান্ত জানতে চাইবে।

এর নিষ্পত্তি হলেই সরকার দণ্ড কার্যকর করতে পারবে।

একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিজামীকে প্রাণদণ্ড দেয়। গত ৬ জানুয়ারি আপিলের রায়েও ওই সাজা বহাল রাখা হলে রিভিউয়ের আবেদন করেন নিজামী।

জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।

তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বেই যে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল- এই মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়।