রেজাউল হত্যা: রাবি ছাত্রের বাবা-ভাই আটক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বাবা ও ভাইকে আটক করেছে পুলিশ।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2016, 04:14 PM
Updated : 29 April 2016, 04:57 PM

শুক্রবার ভোরে বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে থেকে তাদের আটক করা হয়।

বিকালে মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি অন্য হত্যাকাণ্ড ও জুয়েলারিতে ডাকাতির ঘটনায় অগ্রগতির বিষয়েও কথা বলেন।

আটকরা হলেন বাগমারার শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবদুল হাকিম (৬৩) ও তার ছেলে একাদশ শ্রেণির ছাত্র আরিফুল ইসলাম। আব্দুল হাকিম বাগমারা পাইলট হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন।

পুলিশ কমিশনার বলেন, শিক্ষক হত্যায় আব্দুল হাকিমের ছেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

শরিফুল প্রায় এক বছর থেকে নিয়মিত ক্লাশ করে না উল্লেখ করে শামসুদ্দিন বলেন, তার সম্পর্কে তথ্য ও তার অবস্থান জানতে বাবা ও ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

ডাকাতির ঘটনা জনবহুল এলাকায় প্রকাশ্যে ঘটেছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী থাকাটা স্বাভাবিক, কিন্তু কেউ মুখ খুলছে না বলে মনে করেন তিনি।

এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানান পুলিশ কমিশনার।

তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রাখার আশ্বাস দিয়ে তিনি সরাসরি, ফোনে কিংবা চিঠি লিখে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি রাজশাহীতে ঘটে যাওয়া চার খুন ও একটি ডাকাতির ঘটনা নিয়ে বিকালে আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করেন। পরে তারা মতবিনিময় করেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।

মতবিনিময়কালে হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যায় তদন্তের সর্বশেষ অবস্থাও জানান পুলিশ কমিশনার।

তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক জিয়াউল হক টুকুকে হত্যা করা হয়েছে। নয়ন ও তরিকুল নামের দুইজন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে।

তারা দুইজনই কানাডা প্রবাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।”

আর নাইস হোটেলের ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ওই হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়াকে খুন করা হয়েছে। তবে মিজান খুন হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে পর্যন্ত তা নিশ্চিত করতে রাজি নন তিনি।  

মতবিনিময়কালে রাজশাহী র‌্যাবের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।

গত শুক্রবার (২২ এপ্রিল) নগরীর নাইস হোটেলে দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন সকালে নগরীর শালবাগান এলাকায় গলাকেটে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে। তার পরদিন বিকালে নগরীর গোরহাঙ্গা নগর ভবনের সামনে গুলিতে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হক টুকু। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর গণকপাড়ায় বোমা ফাটিয়ে মালিককে কুপিয়ে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।