চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে বেঁধে পিটিয়ে ভিডিও

মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে ধরে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে ভিডিও করার ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীর পবায়।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2016, 05:04 AM
Updated : 14 Feb 2016, 07:28 PM

একদিন আগের এ ঘটনায় শনিবার রাতে পবা থানায় এক সেনা ও একজন র‌্যাব সদস্যসহ ১৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন এক কিশোরের বাবা।    

ওই মামলায় রোববার ভোরে উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রাম থেকে আজিজুর রহমান (৩০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পবা থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন।

সিলেটে শিশু রাজন ও খুলনায় রাকিব হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচার আদালতে বিচার শেষ হওয়ার তিন মাসের মাথায় নির্যাতনের এই ঘটনা ঘটল।

পিটুনিতে আহত দুই কিশোর জাহিদ হাসান ও ইমন বাগসারা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তাদের দুজনকে পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

ওসি জানান, জাহিদের বাবা বাগসারা এলাকার ইমরান আলী শনিবার রাতে ১৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরপর রোববার ভোরে আজিজুর রহমান নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের মধ্যে নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সার্জেন্ট। তিনি বগুড়া ক্যানটনমেন্টে দায়িত্বরত। আর পুলিশ কনস্টেবল সাগর বর্তমানে র‌্যাব সদরদপ্তরে আছেন। দুজনেই ছুটিতে চৌবাড়িয়ায় গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পবা থানার এসআই আবু তাহের জানান।   

জাহিদের বাবা ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার সকালে প্রতিবেশী রাকিবের একটি মোবাইল ফোন চুরি যায়। এ ঘটনায় আরেক প্রতিবেশী মাসুদ আলীর ছেলে ইমনকে ধরে আনে রাকিব।

“এরপর তারা ইমনকে মারধর করলে সে মোবাইল চুরির দায় জাহিদের উপর চাপিয়ে দেয়।”

ইমরানের অভিযোগ, শুক্রবার দুপুরে জাহিদ নানার বাড়ি যাওয়ার পথে রাজশাহী বিমানবন্দরের সামনে থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় নাসির, সাগর, পলাশ, জামাল, রাজ্জাক, অনিক ও তুহিনসহ কয়েকজন যুবক।

“তারা হাত-পা বেঁধে রাত ১০টা পর্যন্ত আমার ছেলেকে মারধর করে। এই ঘটনা ভিডিও করে রেখে পরে ছেলেকে আমার হাতে ফিরিয়ে দেয়।”

মামলা করার পর থেকে আসামিরা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ইমরান আলী।

শুক্রবারই জাহিদকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও ইমনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি পাশের গ্রামে নানা বাড়িতে গিয়ে ওঠেন বলে ওসি শরিফুল জানান।

ইমনের হাত, পা, পিঠে ও ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুক্রবার পিটুনির শিকার হওয়ার পর এই দুই দিন ইমন কোথায় ছিল বা কেউ তাকে আটকে রেখেছিল কি না সে বিষয়ে ছেলেটি কিছু বলতে পারেনি।