শিশু মারিয়া হত্যায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে বাবার ওপর ক্ষোভ থেকে দশ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে হত্যার দায়ে দুই জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 11:53 AM
Updated : 9 Feb 2016, 03:10 PM

মঙ্গলবার গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ কে এম এনামুল হক দুই বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মামলার তিন আসামির মধ্যে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার গোলাম মর্তুজার ছেলে আব্দুল আলিম (৪৫) ও ফরিদপুরের মমিনখাঁরহাট এলাকার আক্কাস শেখের ছেলে সুমন শেখকে (২২) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় রায়ে।

এ আদালতের পিপি হারিছ উদ্দিন জানান, ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই

গাজীপুর শাহীন ক্যাডেট অ্যাকাডেমির কোনাবাড়ি শাখার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া আক্তারকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রাখে আসামিরা।

মারিয়ার বাবা আক্তারুজ্জামান কোনাবাড়ি এলাকার আজিজ ফুড প্রোডাক্ট কারখানায় কাজ করতেন। সুমন ছিলেন ওই কারখানার কর্মচারী। আর আলিম ছিলেন মারিয়াদের বাসার দারোয়ান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক আলম চাঁদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মারিয়ার বাবা আক্তারুজ্জামান প্রায়ই দুর্ব্যবহার করতেন বলে আসামিরা মারিয়াকে হত্যা করে।”

আলিম ও সুমনকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন বিচারক।

রায়ের সময় আলিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে সুমন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে জামিন পেয়ে পালিয়ে যান।

আলিমের স্ত্রী শেফালী বেগমকেও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

মারিয়া আক্তার

মামলার বিবরণে জানা যায়, কোনাবাড়ির এরশাদ নগর হাউজিং এস্টেটের ছয় তলা একটি ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন আক্তারুজ্জামান। ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই সকালে তার মেয়ে মারিয়া স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়ে আর না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।

তারা সুমন ও আলিমের কাছে মারিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বাড়ির সামনে মেয়েটিকে খেলতে দেখার কথা জানায়। অন্য কোথাও না পেয়ে এলাকার লোকজন বাসার গ্যারেজে দেখতে চাইলে সুমন, আলিম ও শেফালী জানান, শিশুটি সেখানেও নেই।

পরে গভীর রাতে এলাকার লোকজন তাদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে গ্যারেজে ঢোকে এবং সেখানে চৌকির নিচ থেকে গলায় গেঞ্জি প্যাঁচানো মারিয়ার লাশ পায়। তার বইপত্র ও স্কুলব্যাগ  পাওয়া যায় রিজার্ভ ট্যাংকের ভেতরে।

এ ব্যাপারে আক্তারুজ্জামান বাদী হয়ে ওই তিনজনকে আসামি করে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।

কোনাবাড়ির পুলিশ সে সময় বলেছিল, ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মারিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা সুমন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।