আকাশে ফিরে গেল ঈগলটি

ভোলার চরফ্যাশনে গ্রামবাসীর হাতে আটক একটি ঈগলকে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ।

আহাদ চৌধুরী তুহিন ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Feb 2016, 08:19 AM
Updated : 7 Feb 2016, 08:19 AM

শনিবার উপজেলার চর কুকরিমুকরি ইউনিয়নের শাহাবাজপুরে ‘বিলুপ্ত প্রায়’ এ ঈগলটি ধরা পড়ে। ওইদিনই ভোলা বন বিভাগ উপজেলার নারিকেল বাগান এলাকার জঙ্গলে পাখিটিকে মুক্ত করে।

বন্যপ্রাণী গবেষকরা বলছেন, কয়েক দশক আগে দেশের যত্রতত্র এ তিলা-নাগের দেখা মিললেও খাবার ও বিচরণভূমির অভাবে এরা এখন বিলুপ্তির পথে।

স্থানীয়রা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শনিবার বিকালে অচিন্ত্য মজুমদার নামের স্থানীয় এক সংবাদকর্মী শাহাবাজপুর এলাকায় একদল গ্রামবাসীকে একটি ঈগলকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে দেখেন।

ওই সময় অচিন্ত্য তার কযেকজন সঙ্গীকে নিয়ে ঈগলটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় বনবিভাগ কার্যালয়ে খবর দেন।

পরে বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ ঈগলটিকে ‘কুকরির নারিকেল বাগান এলাকায় গভীর জঙ্গলে’ অবমুক্ত করে।

বন্যপ্রাণী গবেষক ও বার্ড রিংগার সামিউল মোহসেনিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এটি ‘তিলা-নাগ ঈগল’, যাকে ইংরেজিতে ‘ক্রেস্টেড সারপেন্ট ঈগল’ বলা হয়।

“এটা আমাদের দেশি পাখি। এদের গায়ে ছোট গোলাকার সাদা তিল থাকে। এরা সাপ শিকার করে খায় বলে বাংলায় তিলা-নাগ ঈগল বলা হয়।”

এ পাখির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি বলেন, সাপের পাশাপাশি এরা ব্যাঙ, ইঁদুর ও মাছ শিকার করে থাকে। গভীর জঙ্গলে থাকতে পছন্দ করলেও পাহাড়, নদীর পাড়, বেলাভূমি ও ফসলের মাঠেও খাবারের সন্ধানে ঘোরাফেরা করে।

“তিলা-নাগ ঈগল হিংস্র শিকারি পাখি। এর ঠোঁট এবং পায়ের নখ তীক্ষ্ণ ধারালো। অনেক উঁচু থেকে নিশানা ঠিক করতে পারে। শিকার নাগালের মধ্যে পেলেই এরা ঝাঁপিয়ে পড়ে শিকারের পিঠে বড়শির মতো নখ বিঁধিয়ে কব্জা করে। ”

তিনি বলেন, প্রতিবছর পাখি গণনার সময় কুকরির বনে এ তিলা-নাগ ঈগলের দেখা মেলে। ধারণা করা হয় ভোলার কুকরিতে স্থায়ীভাবে বসবাস ও প্রজনন করে এরা।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া তিলা-নাগ খুব কম নজরে পড়ে। তাই বিপন্ন এই পাখি রক্ষার জন্য বন বিভাগের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।

ভোলা বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের ঈগল এখন নাই বললেই চলে, তবে যারা ঈগলটিকে উদ্ধার করেছেন তারা ভালো করেছেন। সকলের এ বিষয়ে সকলের সচেতন হয় উচিত।

যারা বন্যপ্রাণী শিকার, নিধন ও বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে বন বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।