চীন থেকে আনা বিশেষ ধরনের এই ব্যাগ ফুল থেকে বেগুন আসার কয়েকদিনের মধ্যে পরানো হয়। তাহলে বেগুনে কীটনাশক দিতে হয় না; খরচও কম হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রানীহাটি ইউনিয়নের বহরম গ্রামে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন কৃষক জালাল উদ্দীন।
জালাল উদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ঘিওন এলাকা থেকে ‘ঘিওন’ বেগুনের চারা এনে বাড়ির সামনে লাগান। কিন্তু বেগুন বড় হওয়ার পর তাতে পোকা ধরায় এবং ফেটে যাওয়ায় তিনি কৃষি বিভাগের এক মাঠকর্মীর পরামর্শ নেন।
তার পরামর্শে প্রাথমিকভাবে ১৫০টি বেগুনে ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ পদ্ধতি শুরু করেন বলে জানান জালাল।
“এ পদ্ধতিতে বেগুন চাষে পোকার আক্রমণ কমে গেছে এবং বেগুন ধরার পর কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। শুধু গাছ ছোট থাকার সময় কীটনাশক দিতে হয়,” বলেন জালাল।
জালাল জানান, পরবর্তীতে প্রায় ১৫ কাঠা জমিতে বেগুন চাষ করতে তার খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। এরমধ্যেই তিনি ১৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন।
সামনে চৈত্র মাসের শেষ পর্যন্ত আরও ১৫ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
বেগুন কিনতে আসা ওই গ্রামের রুহুল আমিন ও মোমেনা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ বেগুন চাষে কীটনাশক কম ব্যবহার করায় তারা এ বেগুন কিনতে আগ্রহী হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শরফ উদ্দীন বলেন, বেগুনের প্রধান শত্রু ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য কৃষকেরা মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করেন, যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া এতে বেগুনের উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়।
এই সমস্যাটি সমাধানে ব্যাগিং প্রযুক্তি প্রয়োগ করে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে বেগুনকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, একটি বেগুনের বয়স দুই থেকে তিন দিন হলেই ব্যাগটি পরানো উচিৎ। বেগুনের বয়স যত বেশি হবে পোকায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকা তত বাড়বে। বিভিন্ন জাতের বেগুনকে ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদে ব্যাগের মধ্যে বেগুনকে থাকতে হয়।
“ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে এক কেজি বেগুন উৎপাদনে খরচ হবে দেড় থেকে আড়াই টাকা,” বলেন শরফ উদ্দীন।