হাসিনা গণতন্ত্রের মশাল হাতে: গাফফার চৌধুরী

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন একুশের গানের রচয়িতা, কলামনিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2015, 06:54 AM
Updated : 4 July 2015, 06:56 AM

তিনি বলেছেন, “বলতে দ্বিধা নেই, সারাবিশ্বে গণতন্ত্র এবং সেক্যুলারিজমের প্রতীক হয়ে আছেন শেখ হাসিনা। অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে একটি মশাল ধরে রেখেছেন শেখ হাসিনা।

“এ যাবত নয় বার তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু তিনি সে মশাল ছাড়েননি। যে মশাল জ্বালিয়ে গেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।”

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনায় একথা বলেন গাফফার চৌধুরী।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট থাকার জন্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে একটি ‘আজীবন সম্মাননা’ দেওয়া হয় গাফফার চৌধুরীকে।

ক্রেস্ট তুলে দিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্বায়ী প্রতিনিধি এ কে এ মোমেন বলেন, “পিআর লেকচার সিরিজে এই প্রথম একজন বাঙালি অংশ নিলেন। এর আগে আমেরিকার বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন।”

বয়সের ভার ও শারীরিক অসুস্থতার মধ্যে অন্যের সহায়তায় মঞ্চে উঠে আলোচনা করেন গাফফার চৌধুরী। উপস্থিত শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক-কলামনিস্ট বেলাল বেগ, সাংবাদিক সৈয়দ মুহম্মদ উল্লাহ, আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান, সাজ্জাদুর রহমান, ড. নূরন্নবী, নূরনবী কমান্ডার, ইমদাদ চৌধুরী, মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, জাসদ নেতা আব্দুল মোসাব্বির, নূরে আলম জিকু, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সেক্রেটারি ফখরুল আলম, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল আহসান, সেক্রেটারি দর্পণ কবীর, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের নেতা টমাস দুলু রায় প্রমুখ।

ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে গাফফার চৌধুরী বলেন, “একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে পশ্চিমা হায়েনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা যদি স্বাধীন না হতাম, তাহলে আমাদের এই ভূখণ্ডটিতেও তালেবানের উদয় হত, তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত হত।”

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পতন ঘটলেই পৃথিবী থেকে দুটি রাষ্ট্র নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। এ দুটি হচ্ছে পাকিস্তান আর ইসরাইল।

“পাক-ভারত উপমহাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে পাকিস্তান। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে তথামুসলিম বিশ্বের বিরুদ্ধে জঘন্য অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্রের কূটচালে এরা এহেন অপকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে।”

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করেছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশের জন্য। সে লক্ষ্যে এখনও অবিচল বাঙালিরা।

“মৌলবাদীদের অপতৎপরতায় যতই জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হোক না কেন, আমাদের ভবিষ্যত অত্যন্ত উজ্জ্বল।”

শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে গাফফার চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে সত্যিকারের অভাবী ভিক্ষুক এখন নেই। ভিক্ষুক যা দেখা যায়, সেটা হচ্ছে স্বভাবী ভিক্ষুক।”

‘জিয়াকে ঘৃণা করি’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে এক মাস এক ঘরে থাকার অভিজ্ঞতায় তার ভূমিকাও তুলে ধরেন গাফফার চৌধুরী। 

“কখনও আমি তাকে যুদ্ধ করতে দেখিনি। সব সময় দেখতাম সাজগোজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে। আর স্ত্রী খালেদা জিয়া কেন পাক বাহিনীর ক্যাম্প ছেড়ে তার কাছে আসছেন না, সে চিন্তায় থাকতেন। এজন্য আমি সবসময় জিয়াকে ঘৃণা করি।”

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কটূক্তি না করার আহ্বানও জানান গাফফার চৌধুরী।

“স্বাধীনতার পর খালেদা জিয়ার সংসার ভেঙে যাবার উপক্রম হয়েছিল। সংসার বাঁচিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। সে সময় বঙ্গবন্ধুকে তিনি অভিভাবক হিসেবে সম্বোধন করেছিলেন। তাই খালেদা জিয়ার উচিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে কোনো কটূক্তি না করা।”

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা এখন থেকে সরাসরি আমাদেরকে জানাতে পারেন। পুরো নাম, ঠিকানা ও ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়   probash@bdnews24.com